লিথুনিয়া কাজের ভিসা পাওয়ার পদ্ধতি
বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর হাজার হাজার শ্রমিক লিথুনিয়াতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে কাজের উদ্দেশ্যে যাচ্ছে। লিথুনিয়াতে কাজের অনেক ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকাই অনেকে এখন সেখানে যেতে আগ্রহী।
লিথুনিয়াতে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় অনেকে যেতে চাইলেও কিভাবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করতে হয় এই বিষয়ে অনেকেই জানেন না। খুবই কম খরচে এখন লিথুনিয়া যাওয়ার জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা করা যাচ্ছে। নিম্নে লিথুনিয়া কাজের ভিসা করার নিয়ম ও লিথুনিয়া যেতে কত টাকা লাগে এই নিয়ে মূল্যবান তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
লিথুনিয়াতে কাজের ভিসায় কেন যাবেন
লিথুনিয়া এক খুবই শান্তিপ্রিয় একটি দেশ। লিথুনিয়া বাল্টিক সাগরের পূর্ব উপকূলে সুইডেনের বিপরীত তীরে অবস্থিত। অর্থনৈতিক দিক থেকেও লিথুনিয়া দেশটি দারুন শক্তিশালী।
লিথুনিয়াতে তাই সময়ই বিভিন্ন কাজের জন্য অনেক দেশ থেকে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে লোক নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। আগ্রহী কর্মীরা চাইলে এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে খুব সহজেই কিছু শর্তাদি পূরণ করে লিথুনিয়াতে কাজের ভিসা নিয়ে চলে আসতে পারবেন।
তাছাড়া অনেকেই লিথুনিয়া যেতে চাই কেননা লিথুনিয়াতে যেতে অনেক কম টাকা খরচ হয় এবং সেখানে কাজের সুযোগ সুবিধা অনেক ভালো অন্যান্য দেশে তুলনায়। তাই যদি যোগ্যতা থেকে থাকে তাহলে লিথুনিয়াতে কাজের ভিসার জন্য আবেদন করে লিথুনিয়া যাওয়া যাবে।
লিথুনিয়াতে কাজের ভিসার জন্য কি কি লাগে
লিথুনিয়াতে যারা ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে যেতে চান তাদেরকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আবেদনপত্রের সাথে জমা দিতে হবে। আবেদনকারীর অবশ্যই এক্ষেত্রে ওয়ার্ক পারমিট, বৈধ পাসপোর্ট, ব্যাংক স্টেটমেন্ট সহ প্রয়োজনীয় আরো অনেক ডকুমেন্ট লাগবে। নিম্নে লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য কি কি ডকুমেন্ট লাগে তা উল্লেখ করা হলো:-
১.কমপক্ষে ছয় মাস মেয়াদী একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে এবং পাসপোর্টে অবশ্যই দুই পৃষ্ঠা ফাঁকা থাকতে হবে।
২. আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবি থাকা লাগবে।
৩.আবেদনকারি ব্যক্তির ব্যাংক স্টেটমেন্টের কপি লাগবে।
৪.লিথুনিয়া লেবার এক্সচেঞ্জ দ্বারা জারি করা ওয়ার্ক পারমিট লাগবে।
৫.আবেদনকারী ব্যক্তির আয়ের উৎসের প্রমাণপত্র দেওয়া লাগবে।
৬. মেডিকেল রিপোর্ট প্রয়োজন হবে।
৭.নির্দিষ্ট কাজের উপর দক্ষতার বৈধ প্রমাণপত্র দিতে হবে।
লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট বা কাজের ভিসা করার জন্য সাধারণত এই ডকুমেন্টগুলো লেগে থাকে। তারপরেও যদি বাড়তি কোন ডকুমেন্ট লাগে তাহলে আপনাদেরকে এম্বাসির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। পরবর্তীতে চাইলে এই বাড়তি ডকুমেন্টগুলো ভিসা আবেদন পত্রটির সাথে জমা দিতে পারেন।
লিথুনিয়া কাজের ভিসা পাওয়ার উপায়
লিথুনিয়া কাজের ভিসা পাওয়ার পদ্ধতি অনেকটাই সহজ। ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করা, এম্বাসিতে যোগাযোগ করা, আবেদন ফরমটি পূরণ করে সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়া, ভিসা প্রসেসিং এর জন্য অপেক্ষা করা এই পদক্ষেপ গুলোর মাধ্যমে বেথুনিয়া কাজের ভিসা পাবেন। নিম্নে লিথুনিয়া কাজের ভিসা পাওয়ার পদ্ধতি কেমন সেই বিষয়ে কিছুটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে:-
Step 1: প্রথমে লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ করতে হবে। লিথুনিয়া কাজের ভিসা পাওয়ার জন্য সর্বপ্রথম আপনাদেরকে লেবার এক্সচেঞ্জ ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ করতে হবে। এখানে আপনার নিয়োগকর্তার কাছ থেকে কাজের অনুমতি পাওয়ার আগে অবশ্যই আপনাকে নির্দিষ্ট ডকুমেন্ট প্রদান করে ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করতে হবে। তবে অনেক ক্ষেত্রে ওয়ার্ক পারমিট প্রয়োজন হয় না ভিসা আবেদন করার জন্য।
step 2: লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার জন্য এবার আপনাদেরকে নিকটস্থ লিথুনিয়া এম্বাসিতে যোগাযোগ করতে হবে। লিথুনিয়া এম্বাসিতে আপনারা সরাসরি যোগাযোগ করে ভিসা আবেদন করা, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়া, ভিসা প্রসেসিং সহ কি কি করতে হবে সব বিষয়ে এখান থেকে গাইডলাইন পাবেন বা জেনে নিতে পারবেন।
Step 3: আপনারা যখন বাংলাদেশে অবস্থিত লিথুনিয়া কনস্যুলেটের যোগাযোগ করবেন আপনাকে সেখান থেকে অথবা তাদের অনলাইন ওয়েবসাইট থেকে ভিসা আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে। আবেদন ফরম সংগ্রহ করে অথবা অনলাইন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনার সকল তথ্য সঠিক ও নির্ভুলভাবে দিয়ে আবেদন ফরমটি ভালোভাবে পূরণ করতে হবে। অনেকে আবেদন ফরম পূরণ করার সময় ভিসার ধরন সিলেক্ট করেন না। আবেদন ফরম পূরণ করার সময় অবশ্যই visa type সিলেক্ট করতে হবে।
step 4: কাজের ভিসার আবেদন ফরম পূরণ করে এবং সকল কাগজপত্র একত্রিত করে অ্যাম্বাসিতে জমা দেওয়ার জন্য তাদের সাথে যোগাযোগ করে এপয়েন্টমেন্ট গ্রহণ করা লাগবে। আপনাদেরকে অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট তারিখে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে আপনার ভিসার আবেদন ফরম ও সকল কাগজপত্র একত্র করে এম্বাসিতে জমা দেওয়া লাগবে।
step 5: তারপরে সকল কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়ে গেলে এবার আপনাদেরকে ভিসা প্রসেসিং এর জন্য অপেক্ষা করা লাগবে। লিথুনিয়া কাজের ভিসা প্রসেসিং হতে সাধারণত ৭ থেকে ১৪ দিনের মতো সময় লেগে থাকে। কারো কারো ক্ষেত্রে এই সময়টা বেশিও লাগতে পারে। বিশেষ করে যাদের তথ্য ও কাগজপত্রে জটিলতা দেখা দেয় তাদের ভিসা প্রসেসিং হতে একটু বেশি সময় লেগে থাকে।
লিথুনিয়া কাজের ভিসা করতে কত টাকা লাগে। লিথুনিয়া যেতে কত টাকা লাগে
মিঠুনিয়াতে যারা কাজের ভিসা নিয়ে যেতে চান তাদের মাঝে অনেকেই আছেন যারা জানতে চান লিথুনিয়া কাজের ভিসা আবেদন করার জন্য কত টাকা লাগে। লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ফি নেওয়া হয়ে থাকে ১২০ ইউরো। যা বাংলাদেশী টাকায় হিসাব করলে ১৭ থেকে ১৮ হাজার টাকার মতো জমা দিতে হয়।
বাংলাদেশ থেকে যদি কোন ব্যক্তি এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা করাতে চান তাহলে ৬ থেকে ৭ লক্ষ টাকা খরচ আসতে পারে। তবে সরাসরি যারা এমব্যাসি বা কনস্যুলেটের মাধ্যমে করে থাকেন তাদের খরচের পরিমাণটা অনেকটা কম লাগে। দালালের মাধ্যমে লিথুনিয়া কাজের ভিসা করতে হলে ৮ থেকে ৯ লক্ষ টাকা খরচ আসতে পারে। তাই সব থেকে ভালো হয় বাংলাদেশ সরকার স্বীকৃত কোন এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা করে নেওয়া।
লিথুনিয়া এম্বাসি বাংলাদেশ
লিথুনিয়া এম্বাসির মাধ্যমে খুব সহজেই লিথুনিয়া ভিসা করে নেওয়া যায়। লিথুনিয়া এম্বাসি বাংলাদেশের ঢাকায় অবস্থিত। কেউ চাইলে সরাসরি ঢাকায় গিয়ে লিথুনিয়া এম্বাসির মাধ্যমে যোগাযোগ করে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।
লিথুনিয়া ভিসা সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন?
প্রশ্ন ১: লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এজেন্সির মাধ্যমে করলে ভালো হবে নাকি দালালের মাধ্যমে করলে ভালো হবে?
উত্তর: লিথুনিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা অবশ্যই সরকার স্বীকৃত কোন এজেন্সির মাধ্যমে করতে হবে। দালালের মাধ্যমে অনেক টাকা দিয়ে ভিসা করে নিলে অনেক ঝুঁকি থাকে।
প্রশ্ন ২: লিথুনিয়া ভিসা খরচ এত বেশি কেন?
উত্তর: লিথুনিয়াতে কাজের সুযোগ সুবিধা অনেক ভালো এবং লেখনিয়াতে কর্মীদের বেতন অনেক বেশি। তাছাড়া সেখানে দক্ষতা সম্পন্ন কর্মী ছাড়া নেওয়া হয় না। তাই সাধারণত লিথুনিয়া ভিসা খরচ অনেকটা বেশি অন্যান্য দেশের তুলনায়।
প্রশ্ন ৩: লিথুনিয়ার মুদ্রার নাম কি?
উত্তর:- লিথুনিয়ায় মুদ্রা কে লিটাস বলা হয়ে থাকে।
প্রশ্ন ৪: লিথুনিয়ার রাজধানীর নাম কি?
উত্তর: লিথুনিয়ার রাজধানীর নাম ভিলনিয়াস। এটি লিথুনিয়া দেশের বৃহত্তম একটি শহর।