ভিসা খবর

কুয়েতে কোন কাজের চহিদা বেশি। কুয়েতে কাজের বেতন কত

কুয়েত খুবই উন্নত একটি দেশ। বাংলাদেশ থেকে অনেকেই কুয়েতে কাজের উদ্দেশ্যে যায়। কুয়েতে কোম্পানি ভিসা সহ আরো অনেক ধরনের কাজের মাধ্যমে লোক নেওয়া হয়ে থাকে।কুয়েতে শ্রমিকদের অসংখ্য সুযোগ সুবিধা দেওয়ার কারণে অনেকের কাছে এই দেশটি পছন্দ। 

 

তবে কুয়েত যাওয়ার আগে অবশ্যই আপনাদেরকে জেনে নিতে হবে কুয়েতে কোন কাজের চাহিদা বেশি ও কুয়েতে কাজের বেতন কত। অর্থাৎ এর মাধ্যমে আপনারা কুয়েতে গিয়ে ভালো টাকা ইনকাম করতে পারবেন।কুয়েতে বর্তমানে বেশ কিছু কাজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। একজন দক্ষ ব্যক্তি যদি এই কাজগুলোর যেকোনো একটি ভালোভাবে আয়ত্ত করে কুয়েতে যেতে পারেন তাহলে সেখানে গিয়ে ভালো কিছু করা সম্ভব। 

 

কেননা কুয়েতে সকল সময় দক্ষ লোকের চাহিদা রয়েছে। নির্দিষ্ট কাজে দক্ষ ব্যক্তিরা অনায়াসে কুয়েতে ভালো কাজ পেয়ে থাকেন এবং ভালো টাকা ইনকাম করে থাকেন। তাই আজকের পোস্টে কুয়েতে কোন কাজের চাহিদা বেশি ও কুয়েতে কোন কাজের বেতন কত এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করা হবে। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক:-

 

কুয়েত কোন কাজের চাহিদা বেশি 

 

কুয়েত এমন একটি দেশ যেখানে দক্ষ জনশক্তির কাজের অভাব নেই। কুয়েত দেশটিতে বর্তমান সময়ে রেস্টুরেন্ট, হোটেল, কনস্ট্রাকশন, ইলেকট্রিশিয়ান, ড্রাইভিং, ওয়েল্ডিং মিস্ত্রি এই কাজগুলোর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাছাড়া কুয়েতে যদি কেউ কোম্পানি ভিসা নিয়ে যায় তাহলেও ভালো কাজ পাবেন। কুয়েতে কোম্পানিতে ক্লিনার কাজ, ফ্যাক্টরিতে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে ভালো টাকা বেতন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। 

 

তবে সাম্প্রতিক সময়ে কুয়েতে রেস্টুরেন্ট ও হোটেল খাতে অনেক বেশি কাজের চাহিদা রয়েছে। তাছাড়া ইলেকট্রিশিয়ান ও ড্রাইভিং এর কাজ যারা করে থাকেন তারা মাস শেষে কুয়েতে ভালো টাকা আয় করে থাকেন। এই সকল কাজগুলো করার মাধ্যমে অনায়াসেই একজন ব্যক্তি মাসে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারেন।

 

এই কাজগুলোর মধ্য থেকে আপনার পছন্দ অনুযায়ী যে কোন কাজ সিলেক্ট করে নিয়ে সেই কাজগুলোর বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। তাহলে আপনি কুয়েতে গিয়ে অন্যদের তুলনায় একটু বেশি অগ্রাধিকার পাবেন এবং আপনার আয় করার সুযোগ অন্যদের তুলনায় বেশি থাকবে। তাছাড়া পরবর্তীতে আপনি চাইলে নিজের রেফারেন্সে কুয়েতে লোক নিয়ে যেতে পারবেন যেখান থেকে আপনার আয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

 

অন্য পোস্টঃ কুয়েত যেতে কত বয়স লাগে

 

কুয়েতে ইলেকট্রনিক্যাল কাজের কেমন চাহিদা রয়েছে 

 

কুয়েত বর্তমান সময়ে বিশ্বের খুবই উন্নত একটি দেশ। প্রযুক্তি ক্ষেত্র থেকে শুরু করে প্রায় সব ক্ষেত্রেই কুয়েত ব্যাপক উন্নতি সাধন করেছে। তাই কুয়েতে প্রচুর ইলেকট্রিশিয়ান কর্মী রয়েছে যারা ইলেকট্রিক বিভিন্ন কাজ করার মাধ্যমে ভালো আয় করে থাকেন। ইলেকট্রনিক কাজ করার সবচেয়ে বড় সুবিধাটি হচ্ছে এখানে আপনারা পার্ট টাইম ভালো একটি আয় করতে পারবেন ও বোনাস সুবিধা ররেছে। অর্থাৎ আপনি যদি একজন ভালো ইলেকট্রনিক্যাল মিস্ত্রি হয়ে থাকেন তাহলে মাসে অনায়াসেই এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা আয় করতে পারবেন এতে কোন সন্দেহ নেই। তাই কুয়েতে যদি কাজ শিখে যেতে চান তাহলে ইলেকট্রনিকেল কাজের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়ে যেতে পারেন। 

 

কুয়েতে কনস্ট্রাকশনের কাজের ভালো চাহিদা রয়েছে 

 

ইলেকট্রনিক্যাল কাজের পরে সবথেকে বেশি যে কাজটার চাহিদা বর্তমানে কুয়েতে রয়েছে সেটা কনস্ট্রাকশনের কাজ। কুয়েতে কোম্পানি ও অনেক নির্মাণ খাতে বিল্ডিং তৈরি করার জন্য প্রচুর কনস্ট্রাকশন কর্মীর প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাছাড়া কখনো যদি কুয়েতে কনস্ট্রাকশনের কাজে গিয়ে বিল্ডিং ধরে নিজের কাজ করতে পারেন তাহলে সেখানে ইনকাম আরো বাড়বে।আমার এক নিকট আত্মীয় রয়েছে যে দীর্ঘ তিন বছর আগে কুয়েতে গিয়েছিল কনস্ট্রাকশনের কাজে এখন সে নিজেই বিল্ডিং ধরে কাজ করে থাকেন। প্রতিমাসে সে কনস্ট্রাকশনের কাজ করে মাসে তিন থেকে চার লক্ষ টাকা আয় করে থাকেন বিল্ডিং এর লাভসহ সকল হিসাব মিলিয়ে।তাহলে ইতিমধ্যে অবশ্যই বুঝে গিয়েছেন যে কনস্ট্রাকশনের কাজের কি পরিমাণ চাহিদা রয়েছে এবং কনস্ট্রাকশনের কাজে গিয়ে কি পরিমাণ আয় করা যেতে পারে। 

 

কুয়েতে কাজের বেতন কত 

 

কাজের বেতন সাধারণত কাজের ধরনের ওপর অনেকটা নির্ভর করে থাকে। কুয়েতে রেস্টুরেন্টের কাজ, ক্লিনার কাজ, বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে কাজ, ড্রাইভিং কাজ ও ইলেকট্রিশিয়ান এর কাজ অনেকেই করে থাকেন। কাজের দক্ষতা ও কাজের ধরনের উপর ভিত্তি করে একজন ব্যক্তি কুয়েতে বেতন পেয়ে থাকেন। নিচে কুয়েতে কোন কাজের জন্য কত টাকা বেতন দেওয়া হয়ে থাকে তা উল্লেখ করা হলো:-

 

কুয়েত কোম্পানি ভিসা বেতন কত

 

কুয়েতে কোম্পানি ভিসায় ভালো টাকা বেতন দেওয়া হয়ে থাকে। যারা কুয়েতের কোম্পানিগুলোতে কাজ করে থাকে তারা মাসে ১২০ কুয়েতি দিনার থেকে ১৫০ দিনার পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকেন। যা সাধারণত বাংলাদেশি টাকায় হিসাব করলে ৪৫০০০ থেকে ৫০০০০ হাজার টাকার মধ্যে আসে। যখন কর্মীদের অভিজ্ঞতা অনেক বেশি হয়ে যায় তখন তাদের অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে বেতন বাড়ানো হয়ে থাকে। একজন অভিজ্ঞতার সম্পূর্ণ কর্মী কুয়েতের সর্বোচ্চ ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত কোম্পানি ভিসায় বেতন পেতে পারেন। তাছাড়া আরও বেতন বোনাস সহ অনেক ধরনের সুযোগ-সুবিধা কুয়েতের কোম্পানিগুলো কর্মীদের প্রদান করে থাকে। তাই যারা কুয়েতে কোম্পানি ভিসায় যেতে চান তারা অবশ্যই ভালো একটি কোম্পানি ঠিক করে তারপরে কোম্পানির ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। 

 

কুয়েতে বিভিন্ন কোম্পানির বেতনের তালিকা 

 

কুয়েতে অনেক কোম্পানি রয়েছে কাজের ধরনের উপর নির্ভর করে কর্মীদের বেতন প্রদান করা হয়ে থাকে । নিচে কুয়েতে বিভিন্ন কোম্পানির বেতনের তালিকা উল্লেখ করা হলো যেখান থেকে আপনারা চাইলে খুব সহজেই জানতে পারবেন কুয়েতে কোম্পানি ভিসার বেতন কত:-

 

➡️ন্যাশনাল কোম্পানি  ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার

➡️আল ফয়সাল কোম্পানি ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার

➡️আল আব্রাক কোম্পানি ৪০ হাজার থেকে ৭০ হাজার

➡️আল জাজিরা কোম্পানি ৩৫ হাজার থেকে ৬০ হাজার

➡️ডায়ানা কোম্পানি ৩৫ হাজার থেকে ৬৫ হাজার

➡️কেওসি কোম্পানি ৪০ হাজার থেকে ৬০ হাজার

➡️ডিসাইড কোম্পানি ৪০ হাজার থেকে ৭০ হাজার

➡️মাজেদ আল আলহে কোম্পানি ৩০ হাজার থেকে ৬০ হাজার

➡️তানজিকম কোম্পানি ৩০ হাজার থেকে ৬০ হাজার

 

কুয়েতে আরো অনেক ধরনের কোম্পানি রয়েছে যারা ভালো বেতন দিয়ে থাকে। তবে কুয়েতে এই কোম্পানিগুলো অনেক বেশি জনপ্রিয় এবং বাংলাদেশ থেকে বেশিরভাগ ব্যক্তি এই সকল কোম্পানিগুলোতে কাজের উদ্দেশ্যে যায়।নিচে কুয়েতের জনপ্রিয় তিনটি কোম্পানির বেতনের বিবরণ ও কাজের ধরন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। 

 

কুয়েতে সর্বোচ্চ বেতন কত 

 

কুয়েতের সর্বোচ্চ বেতন কত বা কুয়েতে শ্রমিকদের সর্বোচ্চ কত টাকা পর্যন্ত বেতন দেওয়া হয়ে থাকে এই নিয়ে অনেকের জানার আগ্রহ রয়েছে। কুয়েতে বর্তমানে কাজের ভিসায় অবস্থানকারী কর্মীদের ৮০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন দেওয়া হয়ে থাকে। তাছাড়া অনেকেই বোনাসসহ আরো অনেক ধরনের সুযোগ-সুবিধা কুয়েতে পান যার কারণে বেতনের পরিমাণ বাড়তে পারে।একজন কর্মী কত ঘন্টা কাজ করছে বা কি কাজ করছে এর ওপর সর্বোচ্চ বেতনের বিষয়টা নির্ভর করে থাকে। 

 

কুয়েত সর্বনিম্ন বেতন কত 

 

কুয়েতে কাজের ভিসায় যে সকল কর্মী কাজ করে থাকেন তাদের সর্বনিম্ন বেতন ৬০ দিনার পর্যন্ত দেওয়া হয়ে থাকে। এই বেতনটা সাধারণত কর্মীদের কাজের প্রথম পর্যায়ে দেওয়া হয় কাজের ধরনের উপর নির্ভর করে। কুয়েতের ৬০ দিনার বাংলাদেশি টাকায় হিসাব করলে ২০ হাজার টাকার উপরে আসে।

 

কুয়েতে ক্লিনারের বেতন কত 

 

কুয়েতে কোন কাজের চাহিদা বেশি ইতিমধ্যে জানা হয়ে গেলে কুয়েতে ক্লিনারের বেতন কত এই নিয়েও জানার প্রয়োজন রয়েছে। কুয়েতে ক্লিনার ভিসায় যারা কাজ করে থাকেন তারা মাসে ৮০ দিনার থেকে সর্বোচ্চ ১০০ দিনার পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকেন। যা বাংলাদেশী টাকায় হিসেব করলে ৩০ হাজার টাকার উপরে। ক্লিনার ভিসায় যারা দীর্ঘদিন কাজ করছেন তাদের অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে অনেকের বেতন ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। 

 

শেষ কথা, আশা করি ইতিমধ্যে পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে কুয়েতে কোন কাজের চাহিদা বেশি বা কুয়েতে কাজের বেতন কত এই নিয়ে মোটামুটি ধারণা পেয়ে গিয়েছেন।তাই অবশ্যই সঠিক প্রশিক্ষণ নিয়ে কুয়েতে গিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই ভালো কিছু করা সম্ভব।কেননা কুয়েতে সকল সময়ই দক্ষ জন শক্তির চাহিদা রয়েছে। তাই অবশ্যই দক্ষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলে তারপর কুয়েতে যাওয়া উচিত। 

সম্পর্কিত আর্টিকেল

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button

Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home/educarer/public_html/wp-includes/functions.php on line 5373