মালয়েশিয়া থেকে ইউরোপে যাওয়ার সহজ উপায়
মালয়েশিয়া থেকে ইউরোপে যাওয়ার উপায় অনেক সহজ। বাংলাদেশ, ভারতের মতো দেশগুলো থেকে ইউরোপের যাওয়ার জন্য অনেক ঝামেলার সম্মুখীন হতে হলেও মালয়েশিয়া থেকে ইউরোপ যাওয়া একেবারে সহজ। আপনারা সকলেই জানেন বাংলাদেশ দেশ থেকে মালয়েশিয়া ভিসা পাওয়া খুবই সহজ। বাংলাদেশে অবস্থানরত যে কোন বাঙালি মালয়েশিয়া টুরিস্ট ভিসা অথবা মালয়েশিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে সেখানে যেতে পারেন।সেখান থেকে পরবর্তীতে অনেকে চাইলে বৈধভাবে ইউরোপের অনেক দেশে কাজের ভিসা নিয়ে যেতে পারেন। আজকের পোস্টটিতে এই বিষয় নিয়েই আলোচনা করা হবে।
মালয়েশিয়া থেকে ইউরোপ যাওয়ার উপায় /malaysia to europe visa
আপনি যদি এক বছরের বেশি সময় ধরে মালেশিয়াতে বৈধভাবে কাজ করে থাকেন তাহলে খুব সহজেই মালয়েশিয়া থেকে ইউরোপ যাওয়া যায়। বিশেষ করে বর্তমানে যারা মালেশিয়ান নাগরিক রয়েছে তাদের জন্য ৯০ দিন পর্যন্ত সেনজেন ভুক্ত দেশগুলোতে ভ্রমণের জন্য ভিসার দরকার হয় না। জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, স্পেন ও ডেনমার্কের মত দেশগুলোতে মালেশিয়ানরা অনায়াসেই ভ্রমণ করতে পারেন।তাছাড়া মালেশিয়া থেকে সুইজারল্যান্ড ভ্রমণ করার জন্য কোন ধরনের ভিসা প্রয়োজন হয় না। তাহলে এতক্ষণে অবশ্যই বুঝে গিয়েছেন বৈধভাবে কিভাবে ভিসাবাদেও ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোতে ভ্রমণ করা যায় মালয়েশিয়া থেকে।
তবে এই সুবিধা শুধুমাত্র মালয়েশিয়ান নাগরিকরাই পেয়ে থাকে সেনজেনভুক্ত দেশগুলোতে ভ্রমণ করার জন্য।কিন্তু বাংলাদেশ, ভারত সহ এশিয়ার অন্যান্য দেশ থেকে যারা মালয়েশিয়াতে কাজের উদ্দেশ্যে যায় তারা কিভাবে ইউরোপের দেশগুলোতে যাই এই নিয়ে হয় সমস্যা।
মালয়েশিয়াতে যদি বিদেশি নাগরিকরা দীর্ঘ দুই বছর বসবাস করে কাজ করে থাকেন তাহলে তারা ইউরোপের অন্যান্য কিছু দেশগুলোতে ভ্রমণ করার সুযোগ পাবেন। যেমন সাইপ্রাস, বুলগেরিয়া, ইতালির মত দেশগুলোতে মালয়েশিয়া থেকে আপনারা ভ্রমণে যেতে পারবেন।ধরুন আপনি মালয়েশিয়া থেকে ইতালি ভ্রমণে গিয়েছেন। ইতালিতে বাংলাদেশের অনেক এজেন্সি রয়েছে যারা ইতালিতে বিভিন্ন কাজের জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দিয়ে থাকে। আপনাকে এই ক্ষেত্রে সরাসরি এই সকল এজেন্সি গুলোর সাথে যোগাযোগ করে ইতালিতে কাজের ভিসা নিয়ে নিতে হবে। তাহলে খুব সহজেই ইতালিতে কাজের ভিসা পাওয়ার মাধ্যমে আপনি বৈধভাবে কাজ করতে পারবেন।
অন্য পোস্টঃকাতার ফ্রি ভিসায় গিয়ে ভালো বেতনে কাজ করার উপায়
মালয়েশিয়া থেকে ইউরোপে যাওয়ার এজেন্সি
আমি আগেই আপনাদেরকে বলেছি মালেশিয়ায় যদি দীর্ঘ দুই বছর কাজ করে থাকেন তাহলে ইউরোপের কিছু কান্ট্রিতে আপনারা ৯০ দিন ভ্রমণের সুযোগ পাবেন।আপনি যে দেশগুলোতেই যান না কেন সেখানে বাংলাদেশ ভারত ও এশিয়ার অনেক দেশের এজেন্সি রয়েছে যারা ইউরোপের দেশগুলোতে কাজ করার জন্য বাংলাদেশীদের অনেক ধরনের ভিসা দিয়ে থাকে।তাদের কাছ থেকে আপনারা ক্লিনার ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, হোটেল ভিসা, রেস্টুরেন্ট ভিসা, ড্রাইভিং ভিসা সহ অনেক ধরনের ভিসা পেয়ে যাবেন।
আপনাকে এই ভিসা গুলোর মধ্যে থেকে যেকোন ভিসা সিলেক্ট করতে হবে এবং উক্ত এজেন্সি গুলোর মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। পরবর্তীতে তারাই আপনাদেরকে সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা করে দিবে কিভাবে ইউরোপের দেশগুলোতে যেতে হবে।
অন্য পোস্টঃমালয়েশিয়া ভিসা এজেন্ট লিস্ট বাংলাদেশ
মালয়েশিয়া থেকে ইউরোপে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট
মালয়েশিয়া থেকে ইউরোপের যাওয়ার জন্য অবশ্যই কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন হবে। যারা মালয়েশিয়া থেকে ৯০ দিনের জন্য ইউরোপের দেশগুলোতে ভ্রমণের জন্য যেতে চান তাদেরকে মালয়েশিয়া দূতাবাসে প্রয়োজনীয় কিছু ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। নিচে কি কি ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে তা উল্লেখ করা হলো:-
১.আপনার পাসপোর্টে জমা দিতে হবে।পাসপোর্টে অবশ্যই ৬ মাসের মেয়াদ থাকতে হবে।
২.আবেদনকারী ব্যক্তির এনআইডি কার্ডের ফটোকপি জমা দিতে হবে।
৩.দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি প্রয়োজন হবে।
৪.ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট লাগবে।
৫.ইউরোপের অন্য কোন দেশে যদি কখনো ট্রাভেল করে থাকেন তাহলে তার প্রমাণ পত্র লাগবে।
৬.হোটেল বুকিং এর ফটোকপি টিকিট প্রয়োজন হবে।
৭.বর্তমানে আপনি কোন কাজে নিয়োজিত আছেন কিনা তার প্রমাণ পত্র লাগবে।
৮.এয়ার লাইন্সের টিকিট ও ফটোকপি প্রয়োজন হবে।
এই ডকুমেন্টগুলো আপনি চাইলে মালেশিয়ার দূতাবাসের জমা দেওয়ার মাধ্যমে অথবা মালয়েশিয়াতে অনেক এজেন্সি রয়েছে তাদের মাধ্যমে জমা দিয়ে ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে রেজাল্ট পেয়ে যাবেন। অর্থাৎ আপনার আবেদনটি যদি গৃহীত হয়ে থাকে তারা জানিয়ে দিবে আবার আবেদনটি প্রত্যাখ্যান হলেও জানতে পারবেন।
মালয়েশিয়া থেকে ইউরোপে যাওয়ার কিছু সুযোগ সুবিধা
জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করার জন্য অনেকে ইউরোপে কাজের উদ্দেশ্যে যায়। কেননা সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, কাতার, এবং মরিশাসের এর মত দেশগুলোর তুলনায় ইতালি, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি,ডেনমার্কের মতো দেশগুলোতে কাজের সুযোগ সুবিধা বেশি এবং এখানে আপনারা ভাল বেতনে কাজ করতে পারবেন। যা সাধারণত মালয়েশিয়ায় কাজের বেতনের থেকে অনেক বেশি।
আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন বাংলাদেশ থেকে অসংখ্য ব্যক্তি মালয়েশিয়ায় কাজের ভিসার মাধ্যমে যায়।পরবর্তীতে তারা মালয়েশিয়া থেকে ইউরোপের দেশগুলোতে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করে থাকেন কেননা ইউরোপের দেশগুলোতে কাজ পেলে তারা নিজেদের সহ পরিবারের অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পারবেন।যার কারণে অনেকেই মালয়েশিয়া থেকে ইউরোপে যেতে চান।
মালয়েশিয়া থেকে ইউরোপ যেতে কত টাকা লাগে
মালয়েশিয়া থেকে ইউরোপের অনেক দেশে যাওয়া যায়। মালয়েশিয়াতে আপনারা বাংলাদেশের অনেক এজেন্সি পেয়ে যাবেন যার মাধ্যমে ইউরোপের দেশগুলোতে যেতে পারবেন এই সকল এজেন্সির মাধ্যমে যদি আপনি বৈধভাবে মালয়েশিয়া থেকে ইউরোপে যেতে চান তাহলে মোটামুটি চার থেকে ছয় লাখ টাকার মত খরচ এসে থাকে।এই এজেন্সি গুলো আপনার কাজ ঠিক করার পাশাপাশি কাজে যাতায়াত খরচসহ যাবতীয় সকল ধরনের খরচ বহন করে থাকবে। এক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমে যেটা নিতে হবে যে এজেন্সি থেকে কোন ধরনের ভিসা দিচ্ছে এবং এই ভিসার সুযোগ-সুবিধা কেমন থাকবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনি সেই এজেন্সির সাথে কন্টাক করে ইউরোপ যাওয়ার ভিসা নিতে পারে এবং সেখানে গিয়ে কাজ করতে পারেন এবং ভালো বেতন পেয়ে নিজের আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পারেন।
অন্য পোস্টঃপাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে মালয়েশিয়া ভিসা চেক করার নিয়ম
মালয়েশিয়া থেকে ইউরোপ যাওয়ার আগে কিছু সচেতন মূলক কথা
মালয়েশিয়াতে অনেক ধরনের ভুয়া এজেন্সি রয়েছে যারা সাধারণত গ্রাহকদের টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায়।তাছাড়া এমন অনেক ভুক্তভোগী রয়েছে যাদেরকে এক কাজের ভিসা দেওয়ার নাম করে অন্য কাজের ভিসা দিয়ে ইউরোপের দেশগুলোতে পাঠিয়েছে। পরবর্তীতে তারা ইউরোপে গিয়ে ভালো কাজ পাননি যার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের সর্ব শান্ত হয়ে দেশে ফেরত হয়ে আসতে হয়েছে।
তাই এই ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে আগে বুঝতে হবে যে এজেন্সির মাধ্যমে আপনি ভিসা করতে চাচ্ছেন সেটি কতটুকু বিশ্বস্ত। উক্ত এজেন্সির কোন লাইসেন্স রয়েছে কিনা এবং কতদিন ধরে তারা তাদের কার্যকলাপ পরিচালিত করে যাচ্ছে। সবকিছু যাচাই-বাছাই করে তারপরে এই সকল এজেন্সি গুলোর মাধ্যমে আপনাদেরকে ভিসা করতে হবে।
শেষ কথা, মালয়েশিয়া থেকে ইউরোপে যাওয়ার উপায় বা কিভাবে খুব সহজেই মালয়েশিয়া থেকে ইউরোপে কাজের ভিসা নিয়ে যাবেন আশা করি আজকের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা এই বিষয়ে মোটামুটি ধারণা পেয়েছেন। তারপরেও যদি কোন কিছু বুঝতে অসুবিধা হয়ে থাকে বা এই বিষয়ক আরো কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনার কমেন্টের খুবই দ্রুত সময়ের মধ্যে উত্তর দেওয়া হবে। ধন্যবাদ।