ভিসা খবর

বাংলাদেশ থেকে মাল্টা যাওয়ার উপায়।মাল্টা ভিসার দাম কত

আসসালামু আলাইকুম আশা করি সকলেই ভাল আছেন।মালটা খুবই সুন্দর একটি দেশ।বাংলাদেশ থেকে অনেকেই মালটা তে কাজের উদ্দেশ্যে যেতে চান।আজকের পোস্টে মাল্টা ভিসা কিভাবে পাবেন মাল্টা ভিসা খরচ কত এবং মালটা ভিসায় গেলে কাজের বেতন কত হবে এই বিষয়ে আলোচনা করা হবে।তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাকঃ-

 

মাল্টা ভিসা পাওয়ার উপায়

 

মালটায় অনেক ধরণের ভিসা রয়েছে যেমনঃ স্টুডেন্ট ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ভিসা। যেই ভিসা করা হোক না কেন বৈধ ভাবে ভিসার কাজ করতে হবে।অভিজ্ঞতা থাকতে হবে,অভিজ্ঞতা থাকলে ভিসা পেতে সময় কম লাগবে।আর অভিজ্ঞতা না থাকলে ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।মালটা যাওয়ার ভিসা পেতে হলে প্রথমে ভিসা এপ্লিকেশন  করতে হবে,এপ্লিকেশন পূরণ করার সময় কোনো কিছু বাদ দেওয়া যাবে না।

 

এপ্লিকেশন পূরণ করতে হবে কম্পিউটারের মাধ্যমে, হাতে কলমে করা যাবে না, স্টুডেন্ট থাকলে এপ্লিকেশনে ভার্সিটি বা কলেজের নাম পূরণ করে দিতে হবে, অন্য পেশায় থাকলে সেই পেশার কথা উল্লেখ করে দিতে হবে এপ্লিকেশনে,আর যে কোম্পানির কাছে কাজ করা হবে সেই কোম্পানির নাম দিয়ে দিতে হবে,যে কোম্পানির কাজে যেতে চায় তাদের কভার লেটারে মূল উদ্দেশ্য লিখে দিতে হবে,যে কোন কারণে যেতে চায়।

 

মালটার এপ্লিকেশনে মালটা থেকে অন্য দেশে যাওয়ার কথা উল্লেখ করা যাবে না।উল্লেখ থাকলে ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।এরপর এন্ট্রি তে সিঙ্গেল এন্ট্রি দিতে হবে। সিঙ্গেল এন্ট্রি দিলে বিশ্বাস আসবে এপ্লিকেশন পড়ে।এপ্লিকেশনে প্রথমে থাকার জন্য কম দিনের কথা উল্লেখ করতে হবে,কম দিনের কথা উল্লেখ করলে ভিসা খুব সহজেই পাওয়া যাবে।এর আগে অন্য কোন দেশে যাওয়া হয়েছে কিনা এই সম্পর্কে এপ্লিকেশনে উল্লেখ করতে হবে।এপ্লিকেশনে শুধু মালটায় থাকার কথা উল্লেখ করতে হবে।অন্য দেশে যাওয়ার কথা  উল্লেখ করতে হবে, না হলে ভিসা পেতে সমস্যা হবে, যার মাধ্যমে যেতে হবে তার নাম উল্লেখ করতে হবে।

 

এপ্লিকেশনে কাজের কথা উল্লেখ করে দিতে হবে,যে কোম্পানির মাধ্যমে যাওয়া হবে সে কোম্পানির নাম,ঠিকানা, ফোন নম্বর দিতে হবে। টাকা কে বহন করবে তার কথা উল্লেখ করে দিতে হবে।,মালটায় কোন আত্মীয় থেকে থাকলে তাদের কথা উল্লেখ না করায় ভাল,কিন্তু সব কিছু পূরণ করে দিতে হবে এপ্লিকেশনে ।মালটা যেতে  পারবে ১৮ থেকে ৪৯ বয়সের নারী অথবা পুরুষেরা, হোক সে ভারত বা বাংলাদেশের বা অন্য ইউরোপীয় দেশের।অভিজ্ঞতা থাকলে খুব সহজেই যাওয়া যাবে।ভিসা পাওয়ার জন্য ২টি ডকুমেন্ট লাগবে, 

 

১। পাসপোর্ট সাইজের ছবি,২।ইউরোপিয়ান স্টাইলের সিভি।।পাসপোর্টের মেয়াদ থাকতে হবে,আর পাসপোর্টের দুইটা পেইজ খালি  থাকতে হবে,২টি  ছবি লাগবে পাসপোর্ট সাইজের, শেনজেন মেডিক্যাল ইনস্যুরেন্স থাকতে হবে।

 

ভিসা পাওয়ার জন্য প্রমাণ দিতে হবে যে কোম্পানিতে কাজের জন্য যাওয়া হচ্ছে, কেন যাওয়া হচ্ছে, কোথায় থাকবেন এইসব কিছুর প্রমাণ দিতে হবে।মালটাতে থাকতে হলে যথেষ্ট পরিমাণে টাকা থাকতে হবে,নিজের যাবতীয় জিনিসের জন্য টাকা থাকতে হবে,ভিসা পাওয়ার আগে কোম্পানি দেখবে ব্যাংকে টাকা আছে কিনা। এরপর কর্মচারীদের লাইসেন্স লাগবে মালটাতে কাজ করার জন্য।। আর ভিসা পাওয়ার জন্য যে সিভিটা জমা দিতে হবে সেইটাতে একটুও ভুল করা যাবে না।।সিভির সব কিছু পূরণ করে,সিভির একটা কপি রেখে দিতে হবে,কারন ভিসার কপির  প্রমাণ দিতে হবে।

 

এরপর এমবাসিতে কল করে খোঁজ নিতে হবে যে কভার লেটার  অনুমোদন পেয়েছে কিনা। আর মালটা হলো শেনজেন ভুক্ত দেশ।এই দেশে যেতে হলে অন্য দেশ হয়ে যেতে হবে। বৈধ ভাবে যেতে হবে, ভালো দক্ষতা থাকতে হবে,ভালো দক্ষতা থাকলে খুব সহজেই কাজের জন্য ভিসা পাওয়া যাবে মালটায় যাওয়ার জন্য।।  

 

মাল্টা কাজের ভিসা এক মাসের বেতন কত

 

মালটা শেনজেন ভুক্ত দেশ হওয়ায় এখানে কাজের বেতন ভালো পাওয়া যায়।।যেমনঃ

 

১।ডাক্তারের বেতন ৫ লক্ষ টাকা

২।সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের বেতন ২ লক্ষ টাকা

৩।সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের বেতন ২ লক্ষ টাকা

৪।ওয়েব ডেপ্লপারের বেতন ১ লক্ষ ৮০ হাজার

৫।হিসাবরক্ষকের বেতন ১ লক্ষ ৪১ হাজার টাকা

৬।সেফের বেতন ১ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা

৭।গ্রাফিক্স ডিজাইনের বেতন ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা

৮।রিসিফশনের বেতন ৯২ হাজার টাকা  

৯। ওয়েটারের বেতন ৭৮ হাজার টাকা

১০।ক্লিনারের বেতন ৭৬ হাজার টাকা

১১। গার্মেন্টসের বেতন ৮০ হাজার টাকা  

১২।কন্সট্রাকশনের বেতন ৭৮ হাজার টাকা

১৩।ডেলিভারি ম্যানের বেতন ৮৫ হাজার টাকা

১৪।ড্রাইভেরের বেতন ৯০ হাজার টাকা    

 

এই হলো মালটা কাজের এক মাসের বেতনের লিস্ট।

 

মাল্টা যেতে কত টাকা লাগে

 

মালটায় যেতে হলে বিভিন্ন মাধ্যমে যাওয়া যায়,যেমনঃদালাল,কোন আত্মীয়ের মাধ্যমে,বা কোন এজেন্সির মাধ্যমে।এক এক মাধ্যমে যেতে হলে এক এক ভাবে টাকা লাগে।।প্রথমে এপ্লাই করার পর কোন এজেন্সিতে এক লক্ষ থেকে দেড় লক্ষ টাকা লাগবে, ওয়ার্ক পারমিটে যেতে হলে ৫ লক্ষ টাকা লাগবে দালালদের দিয়ে কাজ করালে, এইটা শুধু প্রোসেসিং এবং ভিসার জন্য লাগবে।

 

এছাড়া  বি এফ এস, টিকেট, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স  যাওয়ার পর আরও খরচ রয়েছে ,পারমিটের জন্য লাগে ৫ লক্ষ টাকা, বি এফ এস, ফি  ভিসা জমা দেওয়ার পর ১ লক্ষ টাকা লাগবে,অনলাইনে ইনস্যুরেন্স করতে লাগবে  ৮ হাজার টাকা,ম্যান পাওয়ার করতে লাগবে ৭ হাজার ৫০০ টাকা।টিকেট করতে ৭০ হাজার টাকা লাগে, মেডিক্যাল চার্জ লাগে ২০ হাজার টাকা।সর্বমোট ৮ থেকে ৯ লক্ষ টাকা লাগে মালটা যেতে।মালটায় যেতে হলে  ৮ থেকে ৯ লক্ষ টাকা বাজেট রাখতে হবে।

 

মাল্টা ভিসা চেক করার নিয়ম 

 

প্রথমে অনলাইনে টাইপিং করে মালটা ভিসা ট্র্যাকিং লিখে সার্চ করে নিতে হবে,এরপর রেফারেন্স নাম্বার এবং জন্ম তারিখ বসিয়ে নিতে হবে ফাঁকা স্থানে,আই এম নট এ রোবটে  ক্লিক করে জমা দিতে হবে।তারপর দেখা যাবে ভিসা চেক এসেছে কিনা,ভিসা আসলেও দেখা যাবে,না আসলেও দেখা যাবে।এই ভাবে ভিসা চেক করে নিতে হবে।

 

মাল্টা থেকে ইতালি যাওয়ার উপায়

 

মালটা থেকে ইতালি যেতে ছাড়পত্র দেখাতে হবে,মালটা থেকে ইতালি যেতে হলে টি আর কার্ড লাগে। টি আর কার্ড থাকলে যেকোনো ইউরোপিয়ান দেশে যাওয়া যায়,টি আর ট্র্যাভেল কার্ড পাওয়ার পর আপ ডাউন টিকেট কেটে রাখতে হবে,৯৯% বাধ্যতামূলক ইমিগ্রেশনে ছুটি নিয়ে যেতে হবে,আর টি আর কার্ড থাকলে ইমিগ্রেশনে আটকাবে না, ইতালি যেতে হলে আইডি কার্ড লাগবে।টি আর কার্ড থাকলে খুব সহজেই ইতালি যাওয়া যাবে।

 

মাল্টা থেকে কোন কোন দেশে যাওয়া যাবে

 

মালটা হলো ইউরোপিয়ান শেনজেন দেশ।।এই ইউরোপিয়ান দেশের মতো ২৬টি দেশ রয়েছে।।যেমনঃ

 

১।অস্ট্রিয়া

২।বেলজিয়াম

৩।চেকরিপাবলিক

৪।ডেনমার্ক  

৫। এস্তনিয়া

৬। ফিনল্যান্ড  

৭।ফ্রান্স

৮। জার্মানি  

৯।গ্রিস

১০।হাঙ্গেরি  

১১।আইসল্যান্ড

১২।ইতালি

১৩। লেটভিয়া  

১৪।লিয়েসথেন্সটাইন

১৫।লিথুনিয়া

১৬।লুক্সেমবারগ  

১৭।মালটা

১৮।নেদারল্যান্ড  

১৯।নরওয়ে  

২০। পোল্যান্ড

২১। স্পেন

২২।সুইডেন

২৩।সুইজারল্যান্ড

২৪। স্লোভেনিয়া  

২৫। স্লোভেনিকা  

২৬। পর্তুগাল

 

এই ২৬ টি দেশ শেনজেন ইউরোপিয়ান দেশের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।। এই দেশ  গুলো থেকে খুব সহজেই মালটা যাওয়া যাবে।।

মালটার এক টাকায় বাংলাদেশের কতঃ মালটার এক টাকা বাংলাদেশের ৯৭ টাকা ৮৯ পয়সা।

 

মাল্টা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খরচ

 

মালটা শেনজেন ভুক্ত দেশ,এইদেশে ওয়ার্ক পারমিটে অনেক ধরনের কাজ আছে,যেমনঃ কন্সট্রাকশন,ক্লিনার,প্লাম্বার,রেস্টূরেন্ট, এইসব কাজ রয়েছে।মাল্টায় ওয়ার্ক পারমিটে যেতে টাকা বেশি লাগে,কারন এইটা  শেনজেন ইউরোপিয়ান দেশ।। আর ওয়ার্ক পারমিটে যাওয়ার জন্য দালাল বা এজেন্সিতে টাকা দিতে হয়।কারণ দালাল বা এজেন্সি ছাড়া যাওয়ার মাধ্যম খুব কম থাকে।।এই জন্য তাদের পিছনে টাকা বেশি লাগে।। এই জন্য মাল্টায় ওয়ার্ক পারমিটের ভিসার মূল্য  ১০ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ টাকা লাগে,যেখান থেকে  এজেন্সিকে দিতে হয় ৯ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা লাগে।কারণ  অন্য সব দেশে যেতে  অনেক টাকা লাগে,সেখানে মাল্টার মতো ইউরোপিয়ান দেশে ওয়ার্ক পারমিটে যেতে ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা লাগবে।

 

শেষ কথা, আশা করি আজকের পোস্টে যারা পড়েছেন তারা মাল্টা ভিসা পাওয়ার উপায় বা কিভাবে মালটা ভিসা পাওয়া যায় ও মালটা ভিসা পেতে কত টাকা খরচ হয় এই বিষয়ে মোটামুটি ধারণা পেয়েছেন। তারপরেও যদি এই বিষয় সম্পর্কে কোন কিছু জানার থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ। 

সম্পর্কিত আর্টিকেল

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button