নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম ২০২৩
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে চান। কিন্তু তাঁরা জানেন না কিভাবে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করবেন এবং নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার জন্য কোন ধরনের ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন হয়। যার কারণে অনেকেই অনেক ধরনের ভোগান্তির শিকার হয়ে থাকেন।
আজকের পোস্টের মাধ্যমে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করবো নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম নতুন ভোটার আইডি কার্ড
কিভাবে করবেন সেই সম্পর্কে। যারা এই বিষয় সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেতে চান তারা অবশ্যই আজকের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়বেন।
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম
নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার আগে আপনাকে বেশ কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে বা জানতে হবে। না হলে কোন ভাবেই নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে পারবেন না। আপনাদের সুবিধার জন্য পয়েন্ট আকারে বিষয়গুলো আলোচনা করা হলো। এখান থেকে আপনারা সুস্পষ্ট ধারণা নিতে পারবেন।
ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম নতুন ভোটার কিভাবে হয়
ভোটার হওয়া আমাদের নাগরিক অধিকার। প্রত্যেক নাগরিককে ভোটার হতে হবে। বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন অনেক সময় ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন। এই সময় তথ্য সংগ্রহ কারীর মাধ্যমে নতুন ভোটার হওয়ার যোগ্য ব্যক্তিদের তথ্য নিয়ে দুই নম্বর নতুন ভোটার নিবন্ধন ফরম পূরণ করে দেওয়া হয় এবং সুবিধাজনক স্থানে ভ্যানু তৈরি করার মাধ্যমে ডাটা এন্ট্রি করার কাজটি করা হয়ে থাকে। যারা নতুন ভোটার হওয়ার জন্য যোগ্য তারা কিছু কাগজপত্র দাখিল এর মাধ্যমে খুব সহজেই নতুন ভোটারের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
আবেদনকারীর বয়স কত হতে হবে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য
যারা নতুন ভোটার হতে চান বা নতুন ভোটার আইডি কার্ড করতে চান তাদের বয়স অবশ্যই ১/১/২০০৪ তার পূর্বে হতে হবে। এতে করে ভোটারের বয়স ১৮ বছরের বেশি অথবা কম হলেও কোন ধরনের সমস্যা হবে না।যাদের বয়স ১৮ বছরের কম হবে তার ভোটার আইডি কার্ড পাবে কিন্তু তারা ওই আইডি কার্ড দিয়ে ভোট দিতে পারবেন না।পরবর্তীতে বয়স ১৮ বছর পার হয়ে গেলে এমনিতেই ভোটার তালিকায় নাম চলে আসবে।
নতুন ভোটার হওয়ার নিয়ম/নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন
যারা নতুন ভোটার হতে চান তারা চাইলে দুইভাবে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। যেমনঃ-
১.সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন কমিশনে গিয়ে
২.অনলাইনে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন
সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে গিয়ে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম
সরাসরি সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে গিয়ে দুই নাম্বার ভোটার নিবন্ধন ফরম টি সংগ্রহ করতে হবে। তারপরে ভোটার নিবন্ধন এর ফরম পূরণ করে তার সাথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে পিনআপ করে নির্বাচন কমিশনের অফিসে জমা দিতে হবে।
প্রতিটি দুই নাম্বার ভোটার নিবন্ধন ফরমের একটি ইউনিক নাম্বার থাকে যার মাধ্যমে আবেদনকারীর তথ্যাদি যাচাই করা সম্ভব হয়। তাই ভোটার নিবন্ধন ফরম কি ফটোকপি করে কোন একাধিক ব্যক্তিকে দেখাবেন না বা কোন কম্পিউটারের দোকানে সেটা রাখবেন না।
আবেদন করার পর আপনার সমস্ত তথ্যাদির যদি ঠিক থাকে তাহলে উপজেলা নির্বাচন কমিশনের অফিসার কর্তৃক আপনাকে নতুন ভোটার করার অনুমোদন দেওয়া হবে।
অনলাইনের মাধ্যমে নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম
যারা অনলাইনের মাধ্যমে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করতে চান তারা সরাসরি বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট www.services.nidw.gov.bd
এই ঠিকানায় গিয়ে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করলে দুই নম্বর ভোটার নিবন্ধন ফরম ডাউনলোড হয় এবং সেটি প্রিন্ট করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে পিনআপ নিয়ে উপজেলা নির্বাচন কমিশনের অফিসে জমা দিতে হয়। তারা সেখান থেকে যাচাই-বাছাই করার মাধ্যমে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য অনুমোদন দিবেন।
নতুন ভোটার হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
যারা নতুন ভোটার হতে চান তারা অনেকেই নতুন ভোটার হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কোন ধরনের কাগজপত্র লাগবে সেগুলো সম্পর্কে জানেন না।যার কারণে তারা অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন।তাই আমি এবার আপনাদেরকে বলবো নতুন ভোটার হওয়ার জন্য যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন হয় সেগুলো সম্পর্কেঃ-
১.অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ লাগবে।
২.এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার কোন সার্টিফিকেট থাকলে সেটা প্রয়োজন হবে।তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ নেই তাদের না দিলেও হবে।
৩.পিতা-মাতার এনআইডি কার্ডের কপি এর প্রয়োজন হবে।
৪.বিবাহিত হলে অবশ্যই স্বামী-স্ত্রীর এনআইডি কপি প্রয়োজন হবে।
৫.চেয়ারম্যান /পৌর মেয়র /ওয়ার্ড মেম্বার /ওয়ার্ড কাউন্সিলরের প্রত্যায়ন পত্র লাগবে।
৬.পূর্বে ভোটার হয়নি তার অঙ্গীকারনামা থাকতে হবে বিশেষ করে যাদের বয়স অনেক বেশি তাদের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক।
সাধারণত নতুন ভোটার হওয়ার জন্য এই সকল কাগজপত্র গুলো প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট রেজিস্টার অফিসার এর পরামর্শ অনুযায়ী আপনারা কাগজপত্র জমা দিবেন।
সংশ্লিষ্ট আবেদন অফিসার আবেদনটি অনুমোদন করার পর আপনার ছবি, স্বাক্ষর,দশ আঙুলের ছাপ, এবং চোখের আইরিশ-স্ক্যান করে নেওয়া হবে। তারপর আবেদনের নিচের অংশ কেটে আপনাকে দেওয়া হবে। যাকে সাধারণত ভোটার নিবন্ধন স্লিপ হিসেবে আমরা চিনে থাকি।এই ভোটার নিবন্ধন স্লিপ কি পরবর্তী সময়ে ভোটার আইডি কার্ড তোলার জন্য দরকার পড়ে থাকে। তাই অবশ্যই এই নিবন্ধন স্লিপ কি সঠিকভাবে সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।
ছবি তুলে নেওয়ার ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে আপনার নাম্বারে একটি ম্যাসেজ আসবে এবং সেখানে আপনার আইডি নাম্বার টি প্রদান করা হবে। আর যদি মোবাইলে মেসেজ না আসে তাহলে আপনার নিকটস্থ উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিস অথবা অনলাইন থেকে আপনার আইডি কার্ড নাম্বার টি সংগ্রহ করতে পারবেন।
আর এই নাম্বারের মাধ্যমে অনলাইন থেকে আপনারা নতুন আইডি কার্ড ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। অনলাইন থেকে নতুন আইডি কার্ড টি ডাউনলোড করে সুন্দর করে লেমিনেটিং করে নিতে হবে। এটি দিয়ে আপনারা এনআইডি কার্ড দিয়ে পরিচালিত সব কাজ করতে পারবেন। পরবর্তীতে আপনাকে স্মার্ট কার্ড প্রদান করা হবে।
আমাদের শেষ কথা
আশা করি আজকের পোস্টটি যারা পড়েছেন নতুন ভোটার আইডি কার্ড করার নিয়ম বা নতুন ভোটার হওয়ার জন্য কি কি লাগে এই সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন। তারপরও যদি কোন বিষয় সম্পর্কে বুঝতে কোন ধরনের অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।