সাইপ্রাস স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার উপায় ও সুযোগ সুবিধা
সাইপ্রাস স্টুডেন্ট ভিসাঃউচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয় এ পড়তে চাইলে স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে বিবেচিত বিষয় গুলোর মাঝে অন্যতম হলো সাইপ্রাস স্টুডেন্ট ভিসা । কোন একটি নির্দিষ্ট দেশে পড়াশোনা, থাকা খাওয়া,সেখানে জীবন- ধারণের জন্য আপনার যথেষ্ট যোগ্যতা আছে কিনা সেটার প্রমাণস্বরূপ কিছু ডকুমেন্টস বাঁ কাগজপত্র লাগে।আজকের পোস্টে সাইপ্রাস স্টুডেন্ট ভিসা কিভাবে পাবেন এবং সাইপ্রাস স্টুডেন্ট ভিসার সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।
সাইপ্রাসে স্টুডেন্ট ভিসায় কেন যাবেন
সাইপ্রাসের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাব্যবস্থা অত্যন্ত উন্নত। সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই তা প্রযোজ্য। সাইপ্রাসের মোট জিডিপি’র ৭ শতাংশ ব্যয় হয় শিক্ষার জন্য। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর ক্ষেত্রে যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। সাইপ্রাসে একাধিক বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। সুযোগ সুবিধা হবে বহুল তবে সাইপ্রাসের উচ্চশিক্ষা গ্রহণকারীদের অনেকেই গ্রিস, ব্রিটেন, তুরস্ক, ইউরোপের অন্যান্য দেশ এবং উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন দেশ থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে থাকে।সেজন্যই মূলত সাইপ্রাসের প্রতি শিক্ষার্থীদের এত আকর্ষণ।
মুলত কিছু ডকুমেন্ট যা প্রমান করবে আপনি উক্ত দেশের মিনিমাম স্ট্যান্ডার্ড এর জীবন-যাপন এর খরচ বহন করে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবেন। কোন কোন ক্ষেত্রে এটাকে সার্টিফিকেট অফ সলভেন্সি সচ্ছলতার সনদও বলা হয়। টাকার পরিমাণটা অনির্দিষ্ট হতে পারে।কিন্তু সুবিধাস্বরুপ সাইপ্রাস স্টুডেন্টদের ক্ষেত্রে এগুলো লাগেনা,এগুলো ছাড়াও খুবই ইজি ভাবে সাইপ্রাস স্টুডেন্টের ভিসা পাওয়া সম্ভব।
সাইপ্রাস নামের একটা দ্বীপ বা দেশ আছে তা অনেক বাংলাদেশীর কাছেই অজানা। অনেকে জানেই না।তবুও এই দ্বীপ এ রয়েছে হাজার হাজার বাংলাদেশীর বসবাস।অবশ্য প্রায় ছেলেদেরই ইচ্ছা থাকে,যদি পড়াশোনার পাশাপাশি কিছু একটা করতে পারতাম,তবে বাবার কষ্টটা কিছুটা হালকা হতো।সেজন্য ইতো অনেকে সিদ্ধান্ত নেন সাইপ্রাস পড়াশোনা করার জন্য যাতে পড়াশোনার পাশাপাশি একটা ইনকাম করা যায়।
পড়াশোনার পাশাপাশি কাজের সুযোগ চান, বা পড়াশুনার শেষে কিছু করতে চান তবে অবশ্যই সাইপ্রাস কে পছন্দের তালিকায় রাখতে পারেন।সাইপ্রাস উচ্চমানের একাডেমিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে বিশ্বমানের শিক্ষা এবং বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্বের কেন্দ্র,তিনটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং পাঁচটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং চল্লিশটিরও বেশি সরকারি এবং বেসরকারি উচ্চশিক্ষা সংস্থার সমন্বয়ে একটি সেক্টর, আন্তর্জাতিক একাডেমিক এবং বৈজ্ঞানিক স্বীকৃতি উপকৃত হচ্ছে।
দ্বীপ টি প্রতিবছর লাখের কাছাকাছি আন্তর্জাতিক ছাত্রকে আকর্ষণ করে। শিক্ষার্থীদের বিশেষ শিক্ষায় বিশেষায়িত হতে চায় এমন বিষয়গুলোর সাথে সারিবদ্ধ করতে সক্ষম করে ইউনিভার্স বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইংরেজি,অনুষদ ডিগ্রী সরবরাহ করে যা বিশ্বজুড়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের গ্রহণ করতে ইচ্ছুক।
সাইপ্রাস ভূমধ্যসাগরের একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। এটি ইউরোপ মহাদেশের অন্তর্গত। আয়তনের দিক থেকে ইতালির দুটি দ্বীপ সিসিলি ও সার্ডিনিয়ার পরই এটির অবস্থান। গ্রিস, তুরস্ক, সিরিয়া, লেবানন, ইজরাইল ও গাযা স্ট্রিপ, মিসর ইত্যাদি দেশগুলো সাইপ্রাসকে চারদিকে দিয়ে ঘিরে রেখেছে। ইউরোপের সবচেয়ে দুর্বল ইকনমির কটি দেশের একটা সাইপ্রাস। দেশটা ইউরোপীয় পর্যটকদের জন্য ভূসর্গ। নিকোসিয়া সাইপ্রাসের রাজধানী শহর। সাইপ্রাস এর মাঝামাঝি জায়গায় রাজধানী নিকোশিয়া অবস্থিত । এটা এখন দুভাগে বিভক্ত।সাইপ্রাস দেশটি আয়তনে অনেক ছোট। এখানে মোট জনসংখ্যা প্রায় ১০ লাখের মতো। তার মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশই বিদেশি।সাইপ্রাস ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হয় ২০০৪ সালে। মোট আয়তন ৯২৫১ বর্গ কিলোমিটার। শিক্ষার্থীদের জন্য সিভিল আর্কাইভ অ্যান্ড মাইগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট থেকে অনুমতিপত্র নেওয়া বাধ্যতামূলক।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। নির্দিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার জন্য স্টুডেন্ট ভিসা দেওয়া হয়।যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বদল করেন তবে নতুন করে রেসিডেন্স পারমিট নিতে হবে। প্রতি সেমিস্টারে অত্যন্ত ১২ ক্রেডিট নিলে তাকে পুর্নকালীন কোর্স হিসেবে ধরা হয়। বাংলাদেশ বা ইউরোপের বাইরের দেশের শিক্ষার্থীদের কেবল পুর্নকালীন শিক্ষার্থী ভিসা দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা তাদের আত্মীয়-স্বজন বা পরিবার-পরিজনদের সাইপ্রাস ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানাতে পারে। জনপ্রতি ভ্রমণকারীর ৩০০ সাইপ্রাস পাউন্ড ব্যাংক জামানত প্রয়োজন হয়।
সাইপ্রাসে যাবেন একটাই কারণ, সাইপাস খুব শীঘ্রই সেনজেন কান্ট্রিতে পরিণত হচ্ছে। এবং সেনজেন হয়ে গেলে আপনি যদি সাইপ্রাসে থাকেন তবে ইউরোপের ২৭ টি দেশ আপনি ট্রাভেল করার সুযোগ পাচ্ছেন। চলে যেতে পারবেন ফ্রান্স ইতালি জার্মানির সহ যেকোন দেশে। সাইপ্রাসে খুব সহজে রেসিডেন্স পারমিট পাওয়া যায়। গ্রীস যাওয়া খুব একটা কঠিন ব্যাপার নয়। সাইপ্রাসের মুর্দার নাম ইউরো। সাইপ্রাস একত্রিত ইউরোপের প্রতিচ্ছবি বহন করে। তবে আর একটা বিষয় সাইপ্রাস যখন সেন্টজোন কান্ট্রিতে পরিণত হবে তখন সাইপ্রাসের ভিসা এতো সহজ হবে না।এখানে যদি আমরা সাইপ্রাসের ভাষার কথা বলি , তবে গ্রীক এবং তুর্কি।
সাইপ্রাস স্টুডেন্ট ভিসার সুযোগ-সুবিধা
সাইপ্রাসে চারটি বিভাগে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে;*পাবলিক অ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্তরের প্রতিষ্ঠানসমূহ,*বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্তর প্রতিষ্ঠান,*বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়,*পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়।
সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবেদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে আবেদন ফর্মটি গ্রহণ করুন,,ফর্মটি পূরণ করতে হবে এবং একাধিকতে আবেদন করতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের দ্বারা জমা দিতে হবে।
সাইপ্রাস স্টুডেন্ট ভিসার আবেদনের জন্য যা যা প্রয়োজন
*আপনার ডিপ্লোমা স্ক্যান,* উচ্চ বিদ্যালয় বা স্নাতক ডিগ্রী।*প্রতিলিপি, *পাসপোর্ট স্কেন,*জীবন বৃত্তান্ত,* তহবিলের প্রমাণ, *বৃত্তি,*এসওপি,*পোর্টফোলিও।
সুবিধার মধ্যে পড়ে,সাইপ্রাসে ওয়ার্ক পারর্মিটে এসে কার্ড করার সুযোগ আছে।সাইপ্রাসের ভালো মানের কিছু ইউনিভার্সিটি রয়েছে, শিক্ষার মান উন্নত এবং অনেক ভালো। ইউনিভার্সিটি অফ সাইপ্রাস। সাইপ্রাস ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি। সাইপ্রাসের অফিশিয়াল ভাষা গ্রিক ও তুর্কি। এরপরেই ইংরেজির অবস্থান। তাই দেশটিতে পড়াশোনার জন্য শিক্ষার্থীকে অবশ্যই ইংরেজিতে পারদর্শী হতে হবে।
আরেকটা বিষয় জানিয়ে রাখা ভালো হবে,বাংলাদেশ থেকে যখন কেউ সাইপ্রাসে আসে,তখন টিউশন ফি বাদেও বাংলাদেশ থেকে এয়ারপোর্ট চুক্তি করে আসা লাগে।কিছু দালাল সুবিধা নেওয়ার জন্য এটার মধ্যে ব্যবসার কাজে নিয়োজিত হয়। তারা বিভিন্ন মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে ছাত্রদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অথচ তারা নিজেও জানেনা যে সাইপ্রাসে পড়াশুনা খরছ কেমন বা সুযোগ সুবিধার কেমন। কেউ যদি ভাবেন যে স্টুডেন্ট ভিসায় এসে অন্য কাজে নিয়োজিত হয়ে যাবেন তবে সেটা আপনার জন্য অনেক ট্রাপ ব্যাপার হয়ে যাবে। তাই শিক্ষার্থীদের জন্য এটা সুবিধাবাদি পড়াশোনার পাশাপাশি পার্ট টাইম ইনকাম করা ।
শেষ কথা, আশা করি আজকের পোস্টটি যারা পড়েছেন তারা সাইপ্রাস স্টুডেন্ট ভিসা কি ও সাইপ্রাস স্টুডেন্ট ভিসার সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। তারপরেও যদি এই বিষয় সম্পর্কে কোন ধরনের প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে পারেন।