মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা পাওয়ার উপায় ও সুযোগ সুবিধা
মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসাঃছোট্ট আমাদের এই জীবকে সফলতায় রাঙ্গাতে আমাদের কতোই না আয়োজন।জীবনকে পরিপূর্ণ করতে আমরা পাড়ি দিয়ে থাকি অনেক অজানা গন্তব্যে।স্বপ্ন পূরনে আমরা এগিয়ে যাই অনেক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে।হ্যা আমি প্রবাস আর প্রবাসীদের কথা বলছিলাম।
আমাদের দেশে অনেক নাগরিক রয়েছেন যারা একটু ভালো থাকার জন্য অনেক দেশে পাড়ি দেন।যার মধ্যে মালয়েশিয়া অন্যতম।অনেকে মালয়েশিয়া যান উচ্চ শিক্ষার জন্যই আবার অনেকে জন কর্ম সংস্থানের জন্য।আবার অনেকে মালয়েশিয়া যাচ্চেন ভ্রমনের জন্য কিংবা অনেকে যাচ্চেন সেখানকার নামকরা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য।
মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা চিন্তা করলে আমাদের মাথায় প্রথমে যে কথাটি আসে তা হলো মালয়েশিয়ার ভিসার কথা।যেহেতু এটি ভ্রমনের প্রথম আর প্রধান অংশ।তাই মালয়েশিয়া ভ্রমনের আগে আপনাকে মালয়েশিয়ার ভিসা আবেদনের নিয়ম, সেখানকার সব নিয়মকানুন সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।
মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা আবেদন পদ্ধতি
আমাদের দেশ থেকে মালয়েশিয়া যাওয়া উল্লেখযোগ্য মানুষ হচ্ছে শ্রমিক।অর্থাৎ নিজের কমসংস্থানের জন্য তারা মালয়েশিয়া গিয়ে থাকে।তাই আমরা আলোচনা করবো মালেশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসা পাওয়ার উপায় নিয়ে।
আপনি যদি মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসার জন্য আবেদন করতে চান তো প্রথমে আপনার ছয় মাস বয়সী একটি ভ্যালিড পাসপোর্ট থাকা লাগবে।তারপর আপনি যে কাজে যাচ্ছেন বা যেতে যাচ্ছেন সেই কাজের দক্ষতার উপর একটি সার্টিফিকেট থাকা লাগবে বা আপনি যে যে কাজের উপর দক্ষ তাঁর উপর একটি সার্টিফিকেট থাকা লাগবে।
তাহলেই আপনি মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।আর এই আবেদন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হবে কোন এজেন্সির মাধ্যমে।বাংলাদেশে অনেক সরকারি বেসরকারী এজেন্সি রয়েছে যারা এই রকম ভিসার আবেদন করে থাকে।সেখনা থেকে চাইলে খুব সহজে আপনি মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসার আবেদন করতে পারেন।
তারপর যে বিষয়টি আসে তা হলো মালয়েশিয়ায় ফ্যাক্টরি ভিসার আবেদন করতে গেলে কি কি কাগজপত্র লাগবে বা আবেদন প্রক্রিয়াটি কেমন।আসুন সে সম্পর্কে জেনে নেই।
মালয়েশিয়ার আবেদনের জন্য আপনাকে কিছু কাজগপত্র জমা দিতে হবে।তবে অবশ্যই একটা বিষয় খেয়াল রাখা লাগবে কাজগুলো যেন আসল হয় মানে ভ্যালিড হয়।কেননা অনেকে আছেন যারা অনেকদিন যাবত কাগজ জমা দিয়ে বসে আছে কিন্তু কোন ফল পাচ্ছে না।তাই আপনাকে অবশ্যই সঠিক কাগজ জমা দেওয়া লাগবে যেন পরবর্তীতে আপনাকে খুজে বের করতে পারে।
মালয়েশিয়ার ফ্যাক্টরি ভিসার আবেদনের জন্য লাগবেঃ
১.ছয় মাস মেয়াদি ভ্যালিড পাসপোর্ট
২.৪ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি
৩.আবেদনকারীর এনআইডি কার্ডের ফটোকপি
৪.আবেদনকারীর মা বাবার এনআইডি কার্ডের ফটোকপি
৫.চেয়ারম্যান কর্তৃক সাক্ষরিত সনদপত্র
৬.শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র।
৭.মেডিকেল টেস্ট রিপোর্ট।
উপরোক্ত কাগজগুলো নিয়ে আপনাকে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে এবং আপনার সব তথ্য যেন আপনার এন আইডি কার্ডের সাথে মিল রেখে হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।নইলে পরবর্তীতে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা সুযোগ সুবিধা
বর্তমান সময়ে মালয়েশিয়ার একটি ফ্যাক্টরির ভিসার দাম সাধারনত ২লক্ষ ৫০ হাজার থেকে ৩ লক্ষ টাকা হয়ে থাকে।তবে আপনি যেই এজেন্সির মাধ্যমে যাবেন এজেন্সি ভেদে খরচ কম বেশি হতে পারে।কেননা ভিসার সাথে অন্যান আনুষঙ্গিক খরচ রয়েছে।তাই ভিসার সব কিছু আপনি ভালোমতো এজেন্সির কাছে থেকে জেনে নিবেন আপনার বেতন কতো হবে আপনার থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা কোথায় হবে এই সব খুটিনাটি বিষয় ভালোকরে জেনে নিয়ে আপনি সামনের দিকে আগাবেন।
কারন অনেক এজেন্সি রয়েছে যারা একটি নিদিষ্ট প্যাকেজ অফার করে ।এই প্যাকেজের মধ্যে থাকে আপনার মেডিকের টেষ্টের ফি,আপনার যাতাযাত ভাড়া সহ বাকি অন্যান কিছু।তাই অনেক এজেন্সি এইসবের কথা বলে আপনার থেকে অনেক বেশি টাকা নিয়ে নিতে পারে বা আপনাকে ঠকাতে পারে।তাই বেশ কয়েকটি এজেন্সি দেখে তারপর আপনি সিদ্ধান্ত নিবেন।
মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসাতে বেতন বা আয় কেমন
বর্তমানে যারা মালয়েশিয়াতে বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে কাজ করছেন তাদের বেতন সাধারনত ২৫ হাজার থেকে শুরু করে ৩৫ হাজার পর্যন্ত হয়ে থাকে।আবার যারা আগের শ্রমিক রয়েছেন তাদের বেতন আরো একটু বেশি।তারা ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজারো বেতন পেয়ে থাকেন সব মিলিয়ে।তবে একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে আপনি যদি কাজে দক্ষ হয়ে যেতে পারেন তবে অন্যদের তুলানায় আপনি বেশি বেতন পাবেন।
তাই যাওয়ার আগে আপনি নিদিষ্ট কাজের উপর দক্ষতা অর্জন করে গেলে আপনার জন্য ভালো হয়।বাংলাদেশে অনেক প্রাশিক্ষন সংস্থা রয়েছে যারা এই রকম প্রশিক্ষন দিয়ে থাকে।সেখান থেকে আপনি প্রাশিক্ষন নিয়ে গেলে অন্যদের তুলনায় বেশি ইনকাম করার সম্ভাবনা রয়েছে এবং সহজে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।
অনেক কোম্পানি রয়েছে যারা কর্মীদের উন্নতমানের থাকা খাওয়ার পাশাপাশি বেশ ভালো রকমের বেতন দিয়ে থাকে।আবার অনেক কোম্পানি রয়েছে যারা শুধু থাকার জায়গা দিয়ে তাঁকে আর কিছু দেয়া না।তবে দক্ষতা এবং কাজ দেখে কর্মীদের অনেক কোম্পানি তাদের অন্যান্য যেমন চিকিৎসা,যাতায়াত সব বাকি সব কিছুর ব্যাবস্থা করে থাকে।
বর্তমান সময়ে মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ভিসা চালু আছে।যেমনঃবিভিন্ন হোটেল রেস্টুরেন্ট ভিসা কর্মী ভিসা সহ অন্যান ভিসা।তাই আপনাকে মালয়েশিয়াতে যেতে হলে সকারী বেসরকারী এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করে যেতে হবে।
শেষ কথা
স্বপ্ন পূরনে আমরা আমদের কষ্টার্জিত অর্থ অন্যের হাতে তুলে উড়াল দেই অজানা অচেনা গন্তব্যে।অচেনা গন্তব্যে পাড়ি দেয়ার আগে খুব ভালো করে আপনার গন্তব্য সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। মালয়েশিয়া ফ্যাক্টরি ভিসা পাওয়ার জন্য দালাল মাধ্যম এড়িয়ে চলতে হবে।নইলে আপনার সব কিছুর সম্ভাবনা থাকে।
আমাদের দেশের অনেক পরিবার রয়েছে যারা এই দালালের খপ্পরে পরে নিজের সব কিছু হারিয়েছেন।হয়েছেন সর্বস্বান্ত।তাই এই বিষয়ে খুব সর্তক থাকতে হবে।আপনারা সরাসরি সরকারী নিবন্ধিত এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করে সেখান থেকে আপনার ভিসার সব কাজ করতে পারেন। মালয়েশিয়া সহ অন্যন যে কোন দেশে শ্রমিক হিসেবে যেতে চাইলে আগে কাজের উপর প্রশিক্ষন গ্রহন করুন।দক্ষতা অর্জন করুন।কাজ জানা না থাকলে বিদেশ আপনার জন্য কখনোই সুখের জায়গা হবে না।
আপনি পর্যাপ্ত আয় করতে পারবেন না। ভালো থাকতে গিয়ে আরো বেশি কষ্টের মধ্যে পড়ে যেতে পারেন।পরিবার প্রিয়জনকে ভালো রাখতে গিয়ে আপনি হয়তো তাদের চিন্তার কারন হতে পারেন।তাই জেনেশুনে তারপর যাত্রা করেন।শুভ হোক আপনার যাত্রা এই প্রত্যাশা রইলো।