ভিসা খবর

পর্তুগাল ভিসা পাওয়ার উপায়।পর্তুগাল ভিসার দাম কত

 

পর্তুগাল ভিসা: প্রযুক্তির ছোঁয়ায় এখন ঘরে বসেই পর্তুগাল স্টুডেন্ট, টুরিস্ট ও ওয়ার্ক পারমিট ভিসা খুব সহজেই সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে। তাই স্বাভাবিকভাবে গ্রাহকদের খুব একটা হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে না। জীবনের প্রয়োজনে আমাদের বাইরের দেশে যাওয়ার দরকার পড়ে থাকে। আর এর জন্য প্রয়োজন পরে ভিসার। জানলে অবাক হবেন গত বছরের এক রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে যে– বর্তমানে পর্তুগালের ১০ হাজার বাংলাদেশী বসবাস করছেন এবং সংখ্যাটি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা শেয়ার করতে চলেছি– Portugal visa a to z । মূলত আজকের আলোচনায় থাকছে:

  • পর্তুগাল ভিসা কত প্রকার ও কি কি?
  • পর্তুগাল ভিসা কিভাবে পাওয়া যায়?
  • পর্তুগাল ভিসার দাম কত?
  • পর্তুগালের এক টাকা বাংলাদেশের কত টাকার সমান?
  • পর্তুগালে যেতে মোট কত খরচ পড়তে পারে?
  • পর্তুগাল এক ইউরো বাংলাদেশের কত?
  • পর্তুগাল ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া
  • এবং বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যাওয়ার উপায়।

পর্তুগাল ভিসা কিভাবে পাবেন

 

প্রতিবছর কেউ কাজের উদ্দেশ্যে, আবার কেউ ভ্রমণ করার উদ্দেশ্যে, কেউবা পড়াশোনার উদ্দেশ্যে স্বদেশ থেকে পাড়ি জমিয়ে বিদেশে রওনা হচ্ছেন। আর বর্তমানে আমাদের দেশ থেকে পর্তুগাল সরকার প্রচুর পরিমাণ জনশক্তি আমদানি করছে। তাই আগের তুলনায় এখন আমাদের দেশ থেকে মানুষ কাজ করার জন্য খুব সহজেই যেতে পারছেন পর্তুগালে। যে বা যারা, পর্তুগালে যাওয়ার কথা চিন্তা করছেন– তাদের মনে পর্তুগাল ভিসা নিয়ে অনেক প্রশ্ন। যেমন:পর্তুগালে যেতে কত টাকা লাগতে পারে? পর্তুগাল বিশাল দাম কত? ইত্যাদি ইত্যাদি। তাই এ পর্যায়ে আমরা জানবো পর্তুগাল ভিসার প্রকারভেদ সম্পর্কে। 

 

পর্তুগাল ভিসা কত প্রকার ও কি কি?

 

নিজ দেশ থেকে অন্য দেশে পাড়ি জমানোর পেছনে যেকোন উদ্দেশ্য থেকে থাকে। আর সেই উদ্দেশ্য বা ধরণের উপর ভিত্তি করে পর্তুগাল ভিসাকে চার ভাগে ভাগ করা হয়। সেগুলো হলো:

  1. পর্তুগাল টুরিস্ট ভিসা
  2. পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা
  3. পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
  4. পর্তুগাল মেডিকেল ভিসা

পর্তুগাল টুরিস্ট ভিসা

 

মানুষ ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যে ভিসা করে থাকে তা টুরিস্ট ভিসা হিসেবে সংবর্ধিত। পর্তুগাল দেশটি একটি সুন্দর দেশ। ইউরোপ মহাদেশের দেশগুলোর মধ্যে এই দেশটি অন্যতম একটি দেশ হিসেবে পরিগণিত। যা ইউরোপ মহাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। পর্তুগাল আটলান্টিক মহাসাগরের উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থিত। তাছাড়াও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ এই দেশটি ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে অত্যন্ত পছন্দের। তাই প্রতি বছর সেখানে আনাগোনা ঘটে বাইরের দেশের মানুষের। আর এক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের মানুষ যে ভিসা সংগ্রহ করে থাকে তাই টুরিস্ট ভিসা। 

 

পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা

 

বর্তমানে পর্তুগাল সরকার প্রচুর পরিমাণে স্টুডেন্ট ভিসা প্রধানের অনুমতি দিয়েছে। আর তাই সেখানে বিদেশি স্টুডেন্টদের ঢল নেমেছে। কেননা উচ্চশিক্ষার জন্য সবাই এখন পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা সংগ্রহ করছে সেই দেশে অবস্থান করার জন্য। সেখানে রয়েছে উন্নতমানের বিশ্ববিদ্যালয়,তাছাড়াও শিক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত সুন্দর ও মাধুর্যপূর্ণ। জানলে অবাক হবেন,এই দেশে পড়তে যাওয়ার জন্য ইংরেজিতে পারদর্শিতার কোন সার্টিফিকেট প্রদান করতে হয় না। মূলত সব দিক বিবেচনা করে উচ্চশিক্ষার জন্য অন্যতম ডেস্টিনেশন হিসেবে পুরো বিশ্বের কাছে পরিচিত পর্তুগাল। আর তাই যে বা যারা পর্তুগালে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান এবং ভিসা সংগ্রহ করেন সেটাই হলো পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা।

 

পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

 

পর্তুগালে কর্মসংস্থানের প্রচুর সুযোগ রয়েছে। আর তাই অন্যান্য বাইরের দেশের সাধারণ মানুষ সেখানে কর্মরত হওয়ার উদ্দেশ্যে যে ভিসা সংগ্রহ করে সেটা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা হিসেবে পরিচিত।  

পর্তুগালে কাজের মূলত সুযোগ সুবিধা সিস্টেম এমন– আপনি যদি লিগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় সেখানে কোনো বিষয়ে পড়তে যেতে পারেন তাহলে অনেক ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে হয়তোবা আপনার স্যালারির পরিমাণটা একটু কম হবে ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায়। তবে মজার ব্যাপার হলো– এখানে আপনি বেশি ফ্যাসিলিটিজ পেয়ে থাকবেন। আর কোন মানুষ যদি পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে লিগালি পৌঁছতে পারে তাহলে একটা সময় গিয়ে সেখানে টিয়ার পাওয়ার সম্ভাবনা থেকে থাকে। সেক্ষেত্রে স্যালারির পরিমাণটা পাঁচশো থেকে ৭০০ ইউরোর কাছাকাছি দাড়ায়। তাছাড়াও অনেকেই রয়েছেন, পর্তুগালের মূলত বিজনেস করার উদ্দেশ্যে পাড়ি জামান। কেননা এই দেশটি অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও প্রভাবশালী একটি দেশ।

 

পর্তুগাল মেডিকেল ভিসা

 

কোন মানুষ চিকিৎসা নেওয়ার উদ্দেশ্যে যদি পর্তুগালে পায়জামা জমাতে চান সেক্ষেত্রে পর্তুগাল মেডিকেল ভিসার প্রয়োজন পড়ে। আমাদের দেশ এখন উন্নত শীল। তবে এখনো পর্যন্ত চিকিৎসা নেওয়ার জন্য বাইরের দেশে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে থাকে হর হামেশাই। একটু লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন আমাদের দেশ থেকে প্রায় অনেক মানুষ দেশের বাইরে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য যায়। আর এক্ষেত্রে আপনি এই দৃষ্টিতে যেতে চাইলে, আপনার পর্তুগাল মেডিকেল ভিসা কাটতে হবে। 

পর্তুগালে যেতে কত টাকা লাগে/পর্তুগাল ভিসা দাম কত

 

Portugal visa করতে কত টাকা খরচ পড়বে? এটা খুবই কমন একটা প্রশ্ন। এক্ষেত্রে ভিসার ধরনের ওপর নির্ভর করবে মূল্য। তবে হ্যাঁ, পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগবে এবং সেখানে থাকতে কত টাকা খরচ হবে সেটা নির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়। কেননা ভিসার মেয়াদ ও সময়ের উপরে পর্তুগাল ভিসার দাম নির্ভর করে থাকে। সেই সাথে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভিসার মূল্য নির্ধারিত। তবে আপনি যদি পর্তুগালে কাজের ভিসা সংগ্রহ করতে চান সেক্ষেত্রে আনুমানিক ৭ লক্ষ টাকা খরচ পড়বে। অপরদিকে টুরিস্ট ভিসার জন্য খরচ পড়বে ৪ লক্ষ টাকা। স্টুডেন্ট ভিসার জন্য মোটামুটি পাঁচ লক্ষ টাকা এবং পর্তুগাল মেডিকেল ভিসার জন্য চার লক্ষ টাকা। 

 

পর্তুগালের এক টাকা বাংলাদেশের কত টাকা

 

এক একটি দেশে মুদ্রা বা টাকা এক এক নামে পরিচিত। নামের ভিন্নতার সাথে রয়েছে মূল্যর ভিন্নতা। আর এই দিক বিবেচনায়, পর্তুগালের এক টাকা বাংলাদেশী টাকায় ০.৫৩২১৭৩ টাকা। এই দেশটির মুদ্রার নাম পর্তুগিজ এসকুডো। 

 

পর্তুগাল ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া

 

 Portugal visa আবেদনের জন্য একটি নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। তাই যেই বা যারা পর্তুগাল ভিসা সংগ্রহ করতে চান তারা আমাদের দেওয়া ইন্সট্রাকশন অনুসরণ করুন এবং খুব সহজেই নিয়ে ফেলুন পর্তুগাল ভিসা।

 

অনুগ্রহ করে www.visa.gov.bdএই ওয়েবসাইটে অনলাইনে ভিসার আবেদন পূরণ করুন। এক্ষেত্রে আপনাকে যা যা করতে হবে:

 

প্রথমত: উপরে উল্লেখিত লিংকে প্রবেশ করুন।

 

দ্বিতীয়ত: অনলাইনে ফরম পূরণ করার সময় সেকশন -৪ এ পেমেন্টের অপশনটি স্কিপ করুন।

 

তৃতীয়ত: সেকশন-৬ এ এফএম ট্যাটি নির্বাচন করুন।

 

চতুর্থত: প্রয়োজনীয় ইনফরমেশন দেওয়ার পরবর্তীতে আবেদনপত্র জমা করুন এবং অনুগ্রহ করে তা প্রিন্ট করুন। 

 

পঞ্চমত: প্রিন্ট করা কপি দূতাবাসের কাউন্টারে জমা দিন অথবা দূতাবাসের কনসিলার বিভাগে ডাকযোগে পাঠান। 

 

ব্যাস এটুকুই পরবর্তীতে ভিসা প্রসেসিং শেষে সরাসরি দূতাবাস হতে আপনি আপনার পাসপোর্ট রিসিভ করতে পারবেন। তবে হ্যাঁ আবেদনের সময় যে সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে সেগুলো হলো:

 

  • অনলাইনে আবেদনকৃত ফর্মের প্রিন্ট কপি
  • ২ কপি রঙিন ছবি (৪৫ মিমি × ৩৫ মিমি, সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড)
  • মূল পাসপোর্ট এবং ফটোকপি (ইনফরমেশন পৃষ্ঠা)
  • ভিসা ফিঃ সিঙ্গেল এন্ট্রি- ৩০ ইউরো, মাল্টিপল এন্ট্রি -৯০ ইউরো, নো ভিসা রিকয়ার্ড- ৫০ ইউরো (পর্তুগিজ পাসপোর্ট)
  • নির্দিষ্ট ভিসা অনুযায়ী অনান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

দূতাবাস কন্স্যুলার কাউন্টারের সময়সূচী (শুধু কর্মদিবসে): 

 

ভিসা ইস্যু করার সর্বনিম্ন সময়সীমাঃ ০৭ কর্মদিবস

  • কাগজপত্র এবং পাসপোর্ট গ্রহণ: সকাল ৯.৩০ থেকে দুপুর ১২.৩০ পর্যন্ত
  • কাগজপত্র এবং পাসপোর্ট বিতরণ: বিকাল ৩.৩০ থেকে ৪.৩০ পর্যন্ত

 

পরিশেষে: তো সুপ্রিয় পাঠ্য বন্ধুরা, এই ছিল আমাদের আজকের পর্তুগাল ভিসা সম্পর্কিত আর্টিকেল। পর্তুগাল ভিসা সম্পর্কে যদি আর কোন প্রশ্ন থেকে থাকে কমেন্ট করে জানান এবং পর্তুগাল ভিসা সংগ্রহ করতে আমাদের দেওয়া নিয়ম অনুসরণ করুন। আজ এ পর্যন্তই সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

সম্পর্কিত আর্টিকেল

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button