ব্যবসার আইডিয়া

ক্ষুদ্র ব্যবসার সেরা ৮ টি তালিকা

ক্ষুদ্র ব্যবসার সেরা ৮ টি তালিকা

ক্ষুদ্র মালের ব্যবসা হয়তো অনেকেই চিনেন।এই ব্যবসা গুলো সাধারণত করতে অধিক টাকা মূলধন লাগেনা। অল্প টাকা মূলধন এর মাধ্যমেই এই ব্যবসা শুরু করা যায় এবং পরবর্তীতে ভালো কিছু করা যায়।যারা নতুন উদ্যোক্তা হবেন বলে ভাবছেন তারা চাইলে ক্ষুদ্র মালের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। আজকের পোস্টে আমি আপনাদের সাথে ক্ষুদ্র ব্যবসার তালিকা বা ক্ষুদ্র মালের ব্যবসা সম্পর্কে বলবো।এতে করে আপনারা এই ব্যবসা সম্পর্কিত ভালো গাইডলাইন পাবেন এবং ব্যবসাটি শুরু করতে পারবেন।তাহলে চলুন প্রথমে জেনে নেওয়া যাক ক্ষুদ্র ব্যবসা কাকে বলে এই সম্পর্কেঃ-

 

ক্ষুদ্র ব্যবসা কাকে বলে

 

যেই সকল ব্যবসা আপনি কম মূলধনে করতে পারবেন সেই ব্যবসা গুলো কে সাধারণত ক্ষুদ্র ব্যবসা বলা হয়ে থাকে।সহজ ভাষায় বলতে গেলে ক্ষুদ্র ব্যবসা হচ্ছে এমন এক ধরনের ব্যবসা যেখানে অল্প পুঁজি এবং শ্রমিক নিয়ে ব্যবসা শুরু করা হয়।ক্ষুদ্র ব্যবসা হচ্ছে মূলত ছোট ব্যবসা।এই ব্যবসা করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এখানে ঝুঁকি অনেক কম এবং লাভের পরিমাণ অনেক বেশি। 

 

ক্ষুদ্র ব্যবসার তালিকা 

 

ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করার অনেক সুবিধা রয়েছে।আপনি যদি প্রথম পর্যায়ে বড় কোনো ব্যবসা শুরু করেন তাহলে এতে অনেকটা ঝুঁকি থাকে। তাই আপনার ভিতরে ব্যবসায়ী অভিজ্ঞতাটা নিয়ে আসার জন্য প্রথম পর্যায়ে ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করা উচিত। নিচে বর্তমান সময়ের সেরা আটটি ক্ষুদ্র ব্যবসার তালিকা নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ-

১.কফি শপের দোকান দিয়ে ব্যবসা 

 

ক্ষুদ্র ব্যবসা আইডিয়া গুলোর মধ্যে এই ব্যবসাটি অসাধারণ একটি ব্যবসা।গ্রাম অঞ্চল অথবা শহরে উভয় স্থানেই এখন কফি শপের দোকান দেখা যায়।তাই ভালো একটি স্থান দেখে যদি কফিশপের দোকান দেওয়া যায় তাহলে অবশ্যই এই ব্যবসাটি ভালো কিছু করা সম্ভব।

 

দোকানটি যখন বড় হবে তখন উপার্জনের পরিমাণ অনেক বাড়বে। তখন চাইলে এই ব্যবসাটিকে বৃহৎ পরিসরে করা যায়।কিন্তু প্রথম পর্যায়ে যদি ব্যবসাটি শুরু করতে হয় তাহলে ভালো একটি স্থান দেখে দোকান দেওয়ার বিকল্প নেই।

কিছুদিনের মধ্যেই দোকানটির পরিচিতি বেড়ে যাবে এবং কাস্টমারের সংখ্যাও বাড়বে। এতে করে এই ব্যবসার মাধ্যমে ভালো লাভবান হওয়া যাবে।

২.কাঁচামালের ব্যবসা 

 

কাঁচামালের ব্যবসা হচ্ছে এমন একটি ব্যবসা যে ব্যবসায় ঝুঁকি অনেকাংশে কমে থাকে।তাছাড়া এই ব্যবসার মাধ্যমে প্রতিদিন লাভ করা সম্ভব।

 

আপনি চাইলে দুইভাবে কাঁচামালের ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন। কাঁচামাল সরাসরি সাপ্লাই করে অথবা কাঁচামালের দোকান দিয়ে।যদি কাঁচামালের দোকান দিয়ে ব্যবসাটি শুরু করেন তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই আপনার ব্যবসার পরিচিতি গড়ে উঠবে।

 

ধীরে ধীরে আকার কাস্টমারের সংখ্যাও অনেকাংশে বাড়বে। আপনাকে এবার শুধুমাত্র পাইকারি বাজার গুলো থেকে কম দামে সবজি কিনে এনে সেগুলো কাস্টমারদের কাছে সরবরাহ করতে হবে।

এভাবে প্রতিদিনই আপনি কিছু টাকা লাভ করতে থাকবেন।ধীরে ধীরে আপনার ব্যবসা টিও বড় হতে থাকবে।তখন চাইলে আপনি ব্যবসাটি বৃহৎ পরিসরে শুরু করতে পারেন। তাই যদি ক্ষুদ্র ব্যবসার তালিকা খুঁজে থাকেন তাহলে কাঁচামালের ব্যবসা টি করতে পারেন।

৩.বিউটি পার্লার ব্যবসা 

 

আমাদের দেশে বিউটি পার্লারের ব্যবসাটি বর্তমানে খুবই জনপ্রিয় একটি ব্যবসা। ব্যবসাটি যদি সঠিক ভাবে শুরু করা যায় এবং জনপ্রিয়তা যদি হয়ে যায় তাহলে আর পিছনে ফিরে তাকানো লাগবে না।

 

আমার দেখা একজন বিউটি পার্লার ব্যবসায়ী প্রতিমাসে তার পার্লার থেকে ২ লক্ষ টাকার বেশি ইনকাম করে থাকেন।ধীরে ধীরে তার আয়ের পরিমাণ টা আরো বাড়ছে।

তাই সঠিক স্থানে এবং দক্ষ কিছু কর্মী নিয়ে যদি বিউটি পার্লার ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন তাহলে ভালো কিছু করা সম্ভব। কেননা বর্তমান সময়ের  লাভজনক ব্যবসা আইডিয়া  গুলোর মধ্যে বিউটি পার্লার ব্যবসাটি অন্যতম। 

 

৪.ফলের জুসের ব্যবসা 

 

যারা ক্ষুদ্র ব্যবসার তালিকা খুঁজছেন তারা ফলের জুসের ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।আমরা অনেক সময় বোতলজাতকরণ বিভিন্ন ধরনের জুস খেয়ে থাকি।এইসব জুস তৈরি করা হয়ে থাকে নানা ধরনের কেমিক্যাল দিয়ে।

 

যা আমাদের শরীরের জন্য খুব একটা ভালো নয়। তাই যদি কেউ চোখের সামনে টাটকা ফল দিয়ে তৈরি জুস পান তাহলে তারা আর বোতলজাতকরণ জুস খাবে না।

 

তাই সঠিক স্থান দেখে আপনি যদি ফলের জুসের দোকান দিতে পারেন এবং সেখানে সিজন ভিত্তিক বিভিন্ন ধরনের ফল রেখে জুস তৈরি করতে থাকেন তাহলে আপনার কাস্টমারের অভাব হবে না।

কিছুদিনের মধ্যেই আপনার ব্যবসাটির জনপ্রিয়তা বেড়ে যাবে এবং আপনি আরও অনেক বেশি কাস্টমার পেতে থাকবেন। তখন আপনার লাভের পরিমাণ অনেক বেশি হবে। পরবর্তীতে আপনি চাইলে ব্যবসাটি বৃহৎ পরিসরে করতে পারেন। 

 

৫.ইলেকট্রনিক পণ্যের ব্যবসা

 

ইলেকট্রনিক পণ্যের ব্যবসা এটি খুবই লাভজনক। ব্যবসা। এই ব্যবসাটি করার সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এটি আপনি চাইলে ক্ষুদ্র পরিসরে করতে পারবেন এবং বৃহৎ পরিসরে করতে পারবেন।

 

প্রথম পর্যায়ে আপনারা চাইলে ইলেকট্রনিক কিছু পণ্য চিনে এবং এবং কিছুটা কাজ শিখে একটি ছোট ইলেকট্রনিক এর দোকান দিতে পারেন। আপনি যখন এই ব্যবসায় ভালো সাড়া পাবেন তখন চাইলে দোকানে মাল বাড়াতে পারেন।

আপনার দোকানটির যখন অনেকের কাছে পরিচিত হয়ে যাবে তখন দূর-দূরান্ত থেকে কাস্টমার আসতে থাকবে। তখন এই ব্যবসার মাধ্যমে ভালো অর্থ উপার্জন বা ভালো টাকা লাভ করা সম্ভব। 

 

৬.কবুতরের ব্যবসা

 

গ্রাম অঞ্চলের অনেকেই কবুতরের ব্যবসা করে থাকেন। আমার দেখা এমন অনেক কবুতর ব্যবসায়ী আছে যারা শুধুমাত্র কবুতর বিক্রি করার মাধ্যমেই প্রতিমাসে লক্ষাধিক টাকা আয় করে থাকেন।

আপনি প্রথম পর্যায়ে ১০ থেকে ২০ জোড়া কবুতর কিনে এনে সেগুলো লালন-পালন করতে পারেন। কিছু সময়ের মধ্যে আপনার কবুতরের যখন বাচ্চা হবে তখন কবুতরের সংখ্যা বেড়ে যাবে।

 

এইভাবে দুই বছরের মধ্যে আপনি একজন বড় কবুতর ব্যবসায়ী হয়ে উঠতে পারবেন। তবে কবুতর ব্যবসায় তখনই আপনি সফল হতে পারবেন যখন এই ব্যবসার জন্য আপনার সঠিক পরিকল্পনা থাকবে।

 

কবুতর ব্যবসায়ীর যেমন সফলতা খুব দ্রুত আসে তেমনি অনেকেই ব্যবসা বড় হওয়ার আগেই ব্যর্থ হয়। তাই অবশ্যই সঠিক ভাবে কবুতর ব্যবসা করতে হবে। যারা ক্ষুদ্র ব্যবসার তালিকা খুঁজছেন তারা চাইলে এই ব্যবসাটি কে টার্গেট করতে পারেন।

 

৭.ছাগলের ব্যবসা 

 

গ্রাম অঞ্চলে ছাগলের ব্যবসা টি খুবই লাভজনক একটি ব্যবসা। এই ব্যবসাতে ঝুঁকি অনেক কম থাকার কারণে অনেকে ছাগলের ব্যবসা করে থাকেন।

আপনি চাইলে ছাগলের ফার্ম দেওয়ার মাধ্যমে এই ব্যবসাটি করতে পারেন। প্রথম পর্যায়ে ১০ টি ছাগল নিয়ে ফার্ম শুরু করতে পারেন। ছাগলের রক্ষণাবেক্ষণসহ খাবার-দাবার সবকিছু সঠিক পরিকল্পনা করে নিতে হবে।

 

এক বছরের মধ্যেই আপনার ছাগলের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যাবে। তখন আপনি চাইলে এই ছাগলের ফার্ম দেখাশোনার জন্য একজন লোক রাখতে পারেন।ধীরে ধীরে ফার্মটি বড় হতে থাকবে এবং আপনার ছাগলের সংখ্যাও বাড়তে থাকবে। তখন আপনি চাইলে ব্যবসাটিকে বৃহৎ পরিসরে নিয়ে যেতে পারেন। 

 

৮.সুপার শপ ব্যবসা 

 

সুপার শপের ব্যবসা বলতে অনেকেই ভুল ধারণা নিতে পারেন যে এই ব্যবসাটি কিভাবে ক্ষুদ্র ব্যবসা হতে পারে। হ্যাঁ আপনি এই ব্যবসাটি কে ক্ষুদ্র পরিসরে শুরু করতে পারেন।

অর্থাৎ আপনি সুপারশপের দোকানটি ছোট আকারে দিতে পারেন। ভালো একটি স্থান দেখে সুপারশপের দোকানটি দিবেন এবং দোকানটি ভালো করে সাজাবেন জানো কাস্টমারদের আকর্ষিত করে।

 

আপনি এই দোকান থেকে ভালো রেসপন্স পেলে পরবর্তীতে সুপারশপের দোকানটি বড় করতে পারেন। তাই বর্তমান সময়ে যদি সেরা লাভজনক ব্যবসা খুঁজে থাকেন তাহলে সুপার শপের ব্যবসা টি করতে পারেন।

ক্ষুদ্র ব্যবসার মেশিন

 

সব ধরনের ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য মেশিন প্রয়োজন পড়ে না। কিছু কিছু ব্যবসার জন্য মেশিন লাগে। আপনি যদি জুসের দোকান দিয়ে থাকেন তাহলে আপনার ব্লেন্ডার মেশিন লাগবে। আপনি যদি ফটোকপির দোকান দিতে চান তাহলে আপনার ফটোকপিয়ার মেশিন লাগবে। কিন্তু কাঁচামালের ব্যবসা করার জন্য তেমন কোন মেশিন লাগবে না। তাই যে ব্যবসার ক্ষেত্রে যে মেশিন লাগবে অবশ্যই সে মেশিন নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে হবে। 

 

আমাদের শেষ কথা 

 

আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আমি আপনাদের সাথে সেরা কিছু ক্ষুদ্র ব্যবসার তালিকা নিয়ে আলোচনা করেছি। যারা ছোট ব্যবসা করতে চান তারা চাইলে এই ব্যবসা গুলো করতে পারেন।পরবর্তীতে যদি ব্যবসায় সফলতা পান তাহলে ব্যবসাটিকে বৃহৎ পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারেন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button